বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখায় স: প্রা: বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্লিপের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার যোগসাজস
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক



বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর বর্ণি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রুবিয়া বেগমের যোগসাজসে প্রায় দেড় বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি রহিম উদ্দিন ও ৬ মাস পূর্বে বদলি হয়ে যাওয়া প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম অবৈধভাবে স্কুলের সরকারী বরাদ্দের ৪০ হাজার টাকা গোপনে ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ বর্তমান স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ ও এলাকাবাসীর।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৫১টি স্কুলের মতো উপজেলার উত্তর বর্ণি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়েও স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্টের (স্লিপ) অংশ হিসেবে ৪০ হাজার টাকা সরকারী বরাদ্দ পাওয়া যায়। চলিত বছরের ৩০ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে বরাদ্দকৃত টাকা স্কুলের সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবে জমা দেওয়া হয়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারী এ স্কুল থেকে সুড়িকান্দি প্রাকফস স্কুলে বদলি হন প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পান তাঁরই স্ত্রী সহকারী শিক্ষিকা রুবিয়া বেগম। প্রায় দেড় বছর আগে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ছিলেন রহিম উদ্দিন বুদুর। বর্তমান স্কুল ম্যানেজিং কমিটিকে অন্ধকারে রেখে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকা রুবিয়া বেগম, সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম ও সাবেক সভাপতি রহিম উদ্দিন বুদুর গত ৩০ জুলাই গোপনে ব্যাংক থেকে স্লিপের ৪০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। সোনালী ব্যাংক বড়লেখা শাখা তাদের ৩ জনের স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলনের বিষয়টি বৃহস্পতিবার বিকেলে নিশ্চিত করেছে।

সরেজমিনে গিয়ে স্লিপের বরাদ্দের টাকায় বিদ্যালয়ের কোনো উন্নয়ন কাজের অস্বিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত বছরের ১৬ মার্চ অনুমোদিত স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মোহিত জানান, তিনি শুনেছেন স্কুলের উন্নয়ন কাজের জন্য গত জুন মাসে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ মিলে। কিন্তু ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকাকে এ টাকা উত্তোলনের ব্যবস্থা নিতে বারবার তাগিদ দিলেও তিনি ব্যবস্থা নেননি। পরে জানতে পারেন তিনি, তাঁর স্বামী সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম ও সাবেক সভাপতি রহিম উদ্দিন যোগসাজস করে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেন।

এলাকার বাসিন্দা ছাদ উদ্দিন, নুর উদ্দিন, সুলতানা বেগম প্রমুখ অভিযোগ করেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম বিগত ১৭ বছর ধরে বারবার একই ব্যক্তিকে সভাপতি করে দুইজনে মিলে স্কুলের বিভিন্ন সরকারী বরাদ্দ লুটপাট করেছেন।

স্কুলের সাবেক সভাপতি রহিম উদ্দিন বুদুর প্রায় দেড় বছর আগে তাঁর কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে জানান, প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিম গত ৩০ জুলাই ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রুবিনা বেগমের নামে ৪০ হাজার টাকার একটি চেকে স্বাক্ষর নিতে তাঁর কাছে গেলে তিনি তাতে স্বাক্ষর করে দেন। তিনি ব্যাংকে যাননি। তারাই টাকা তুলেছে। পরে টাকা দিয়ে তাঁরা কি করলো না করলো এর কিছুই তিনি জানেন না।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রুবিয়া বেগমের কাছে জানতে চাইলে তিনি অত্যন্ত মানসিক চাপে রয়েছেন জানিয়ে কোনো কিছুই বলতে রাজি হননি।

বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আব্দুল করিমের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, চেকে আমি স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু টাকাটা তুলেছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা রুবিয়া বেগম। তিনি টাকাটা বিদ্যালয়ের কাজে ব্যয় করেছেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার (প্রাথমিক) রফিজ মিয়া বলেন, ফেব্রুয়ারি মাসে বদলি হওয়া প্রধান শিক্ষক ও দেড় বছর আগে মেয়াদ শেষ হওয়া কমিটির সভাপতির নামে এখনও স্কুলের ব্যাংক একাউন্ট বহাল এবং জুলাই মাসে টাকা তুলা আশ্চর্য ব্যাপার। তাদের স্বাক্ষরে স্কুলের টাকা উত্তোলন সম্পূর্ণ অবৈধ। তদন্তপূর্বক তিনি দায়ীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেবেন।