বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

সিলেটে তিন মন্ত্রী নির্ভার, ‘ডামি’র মুখোমুখি দুই



বিজ্ঞাপন

লাতু ডেস্ক:: মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের মাধ্যমে সারাদেশের ন্যায় সিলেটেও জমে ওঠছে নির্বাচনী মাঠ। বিভাগের ১৯টি আসনের বেশিরভাগেই আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর মুল প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে দাঁড়িয়েছেন দলের ‘ডামি’ প্রার্থীরা। স্বতন্ত্র হিসেবে অংশ নেওয়া নেতারাই এখন ‘পথের কাটা’ হয়ে দাঁড়িয়েছেন নৌকার কান্ডারিদের।

বিভাগের ৪ মন্ত্রী ও ১ প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে তিনজনের আসনে দলীয় কোন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী না হওয়ায় মুটোমুটি নির্ভার রয়েছেন তারা। আর দু’জন মুখোমুখি হতে হচ্ছে দলের ‘ডামি’ প্রার্থীর। এছাড়া ‘ডামি’ প্রার্থীর জন্য সাবেক এক মন্ত্রীকেও কঠিন অবস্থায় পড়তে হচ্ছে।

সিলেট-৪ আসনে প্রবাসী কল্যান ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ এবারও নৌকার টিকেট পেয়েছেন। তার আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন আরও ৭ নেতা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়নবঞ্চিত সবাইকে ‘ম্যানেজ’ করে একক প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন ইমরান আহমদ। আসনটিতে ইমরান আহমদ ছাড়াও মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে ইসলামী ঐক্যজোটের মো. নাজিম উদ্দিন কামরান ও জাকের পার্টির মো. আলী আকবর। এই আসনে জনপ্রিয় কোন প্রার্থী না থাকায় ইমরান আহমদের বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।

মৌলভীবাজার-১ আসন থেকে এবারও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বন পরিবেশ ও জলবায়ূ পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন। ওই আসন থেকেও আওয়ামী লীগের কোন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। আসনটিতে যেসব প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন- জাতীয় পার্টির আহমদ রিয়াজ, তৃণমূল বিএনপির মো. আনোয়ার হোসেন, আঞ্জুমানে আল ইসলাহ’র মো. ময়নুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র ফারুক আহমদ। প্রতিদ্বন্দ্বি শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় শাহাব উদ্দিনও আছেন অনেকটা নির্ভার।

সুনামগঞ্জ-৩ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানও রয়েছেন নির্ভার। মনোনয়ন না পেলে আসনটি থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা ছিল সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদের ছেলে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আজিজুস সামাদ ডনের। কিন্তু মনোনয়নবঞ্চিত হলেও তিনি দলের সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য জানিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হননি। ফলে ‘ডামি’ যন্ত্রণায় পড়তে হয়নি পরিকল্পনামন্ত্রীকে। ওই আসন থেকে তাঁর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তৃণমূল বিএনপির মাওলানা শাহীনুর পাশা, জাকের পার্টি নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির তৌফিক এলাহী ও তালুকদার মো. মকবুল হোসেন।

মন্ত্রীদের মধ্যে দলের ‘ডামি’ প্রার্থীর মুখোমুখি হতে হচ্ছে সিলেট-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবর্তীণ হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। দলের ‘ডামি’ প্রার্থী থাকলেও ভোটের মাঠে বেশ ভাল অবস্থান রয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন।

সিলেট-৬ আসনে দলের ‘ডামি’ প্রার্থী নিয়ে বেশ বেকায়দায় রয়েছেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রার্থী হয়েছেন কানাডা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সরওয়ার হোসেন। টানা ৩ বারের সংসদ সদস্য ও দুইবারের মন্ত্রী হয়েও এলাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন করতে না পারায় জনঅসন্তোষের সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছেন সরওয়ার।

এছাড়া আসনটি থেকে প্রার্থী হয়েছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী। ভোটের মাঠে এখনো শমসের মবিন খুব বেশি ভাল অবস্থানে না থাকলেও শেষ পর্যন্ত চমক দেখাতে পারেন -এমন আলোচনাও রয়েছে সিলেটজুড়ে।

সিলেট বিভাগের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেকায়দায় রয়েছেন হবিগঞ্জ-৪ আসনে বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মাহবুব আলী। আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত যুবলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক (ব্যারিস্টার সুমন) স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মাহবুব আলীর সকল হিসেব-নিকেশ পাল্টে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয় ব্যারিস্টার সুমন যেখানেই যাচ্ছেন সেখানে হাজারো জনতার সম্মিলন ঘটছে। আসনটিতে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও ব্যারিস্টার সুমনের মধ্যে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতার আগাম আভাস মিলছে।

এছাড়া আসনটি থেকে প্রার্থী হয়েছেন বাংলাদেশ কংগ্রেসের আল আমিন, ইসলামী ঐক্যজোট বাংলাদেশের আবু সালেহ, জাতীয় পার্টির আহাদ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মো. মুখলেছুর রহমান, জাকের পার্টির সৈয়দ আবুল খায়ের, ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট বাংলাদেশের মো. আবদুল মুমিন ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের রাশিদুল ইসলাম খোকন।