রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে উপ নির্বাচন: মাধ্যমিকের গণ্ডিতেই আটকে আছেন তাঁরা
গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি

গোলাপগঞ্জ প্রতিনিধি



বিজ্ঞাপন

গোলাপগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পদে উপ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন ৪ জন। শিক্ষাগত যোগ্যতায় তারা সকলেই আটকে আছেন মাধ্যমিকের গণ্ডিতে। চারপ্রার্থীর মধ্যে দু’জনের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক ও দুজন নিজেকে স্বশিক্ষিত হিসেবে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।

নির্বাচন কমিশনের গোলাপগঞ্জ উপজেলা কার্যালয় থেকে পাওয়া হলফনামায় দেখা গেছে- উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সাবেক মেয়র জাকারিয়া আহমদ পাপলু ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমিনুল ইসলাম রাবেলের শিক্ষাগত যোগ্যতা মাধ্যমিক পাস।

অপর দুই প্রার্থী জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মহি-উস-সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস ও পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন হলফনামায় নিজেদের স্বশিক্ষিত বলে উল্লেখ করেছেন।

হলফনামায় প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, দেনা ও মামলা রয়েছে একমাত্র জাকারিয়া আহমদ পাপলুর। বাকি প্রার্থীদের কারও দেনা নেই; নেই কোনও মামলাও।

পাপলুর বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ১২টি মামলা দায়ের হয়েছিল। ১১টি মামলা থেকে তিনি ইতোমধ্যে অব্যাহতি পেয়েছেন। তবে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলা এখনও বিচারাধীন রয়েছে। তার ব্যক্তিগত ও ব্যাংক ঋণ রয়েছে ৮৬ লাখ ২৮ হাজার ৪৩৬ টাকা। পেশায় তিনি একজন রড-সিমেন্ট-বিটুমিন ও ইলেকট্রিক পণ্যসামগ্রী বিক্রেতা। বালু ও পাথরের ব্যবসাও রয়েছে তার। পাপলুর বার্ষিক আয় ১৩ লাখ ৭০ হাজার ৭২৪ টাকা। তার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার রয়েছে সাড়ে ২০ শতক জায়গা, চারটি দোকান ও যৌথভাবে নির্মিত তিনতলা দালান। আমানত হিসেবে ব্যাংকে রয়েছে ৯৬ হাজার ৩৪৮ টাকা।

উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রাবেলের বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। পেশায় চাকরিজীবী রাবেলের বার্ষিক আয় দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা। তার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকার। স্ত্রীর নামে রয়েছে এক লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ। তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে সাড়ে ৪০ শতাংশ কৃষি জমি ও একতলা বাড়ি। এ ছাড়া তার কোন দেনা নেই।

সিলেট জেলা বিএনপির সহ সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মহি-উস-সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিস স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তার বিরুদ্ধে কোনও মামলা নেই। পেশায় কৃষিজীবী নার্জিসের বার্ষিক আয় দুই লাখ ৯৪ হাজার টাকা। তাঁর নামে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর নামে দুই লাখ ৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। তার স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৩১৭ শতক কৃষি ও অকৃষি জমি এবং বাড়ি ও মৎস্যখামার রয়েছে। তারও কোনও দায়-দেনা নেই।

গোলাপগঞ্জ পৌরসভার গত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক প্রার্থী গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহীন। হলফনামায় উল্লেখ করা তথ্য বলছে, তার বিরুদ্ধেও কোনও মামলা নেই। তার রয়েছে ‘প্রাইভেট বিনোদন সেন্টার ও ভূমি উন্নয়ন সংক্রান্ত ব্যবসা’। তার বাৎসরিক আয় তিন লাখ ৩৭ হাজার ৮০০ টাকা। নিজের নামে দুই লাখ ২০ হাজার টাকার এবং স্ত্রী নামে ৭৫ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে তার। তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে ৬২৫ শতক কৃষি ও অকৃষি জমি রয়েছে। তবে তারও কোনও দায়-দেনা নেই।

এদিকে পৌরসভার উপনির্বাচনের বিএনপির দলীয় প্রতিকে কোন প্রার্থী নেই। বিএনপি থেকে রাজু আহমদ চৌধুরী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করলেও তার জমা দেওয়া হলফনামায় তথ্যগত ভুল থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে উপজেলা নির্বাচন অফিস। এরপর আর তিনি মনোনয়নপত্র ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদনও করেননি। সর্বশেষ পৌর নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়া চৌধুরী শাহিন উপনির্বাচনে অংশ নিলেও এবার তিনি বিএনপির প্রার্থী হননি। বিএনপির আরেক নেতা সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মহি উস-সুন্নাহ চৌধুরী নার্জিসও বিএনপির প্রার্থী হননি। তিনিও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।

গোলাপগঞ্জ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা ২১ হাজার ৬৩২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ৯৫৮ ও নারী ভোটার ১০ হাজার ৬৭৪ জন।

উল্লেখ্য, এ বছরের ৩১ মে পৌরসভার চেয়ারম্যান সিরাজুল জব্বার মৃত্যুবরণ করেন। এরপর বিধি অনুযায়ী উপ-নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এ ছাড়া ১৮ সেপ্টেম্বর প্রতীক বরাদ্দ এবং ৩ অক্টোবর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।