নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় স্কুলছাত্রী মোনালিসা আক্তার ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড মামলার আসামিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে গ্রেফতারের পর দেশে আনা হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ ছিল, মোনালিসাকে প্রথমে ধর্ষণ পরে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়। রোববার দুপুরে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি আবু সাঈদকে (২২) দেশে আনা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের। আবু সাঈদ ফতুল্লা পশ্চিম দেওভোগ বড় আমবাগান এলাকার ইকবাল হোসেনের ছেলে।
ওসি মঞ্জুর কাদের বলেন, গত ১৭ সেপ্টেম্বর ইন্টারপোলের মাধ্যমে আবু সাঈদকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী দুবাইয়ে গ্রেফতার করা হয়। পরে সব প্রক্রিয়া শেষে রোববার তাকে দেশে নিয়ে আসা হয়। তারপর আইনি কার্যক্রম শুরু হবে।
পুলিশ জানায়, ঘটনার ৩ মাস আগে আবু সাঈদ বিয়ে করার জন্য দুবাই থেকে বাংলাদেশে আসে। পরে পাশের বাড়ির মোনালিসাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয় সাঈদের পরিবার। কিন্তু মেয়ের বয়স অল্প হওয়ায় সাঈদের প্রস্তাবে রাজি হয়নি মোনালিসার পরিবার। পরে সাঈদ পাশের এলাকার ইভা নামে এক মেয়েকে বিয়ে করে।
কিন্তু ২ ফেব্রুয়ারি একা বাড়ি পেয়ে মোনালিসাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে। পরে ঘটনা আত্মহত্যা হিসেবে চালিয়ে দিতে মরদেহ ফ্যানের সঙ্গে ঝুঁলিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর আবু সাঈদ দুবাই পালিয়ে যায় বলে নিশ্চিত করেছিল তার পরিবার। অগ্রিম রিটার্ন টিকিট থাকায় পালিয়ে যেতে কোনো বেগ পেতে হয়নি তাকে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে ফতুল্লার পশ্চিম দেওভোগ বড় আমবাগান এলাকা নিজ বাড়ি থেকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় মোনালিসা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত মোনালিসা আক্তার স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহীন বেপারীর মেয়ে। সে হাজী উজির আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
ওই সময় মোনালিসার বাবা শাহীন বেপারী বলেছিলেন, মোনালিসা তার বড় মেয়ে। পরিবারে শাহেদ হাসান (৯) নামের তার এক ছেলে সন্তান আছে। দুই সন্তানকে বাসায় রেখে শুক্রবার সকালে স্ত্রী মরিয়ম বেগমকে নিয়ে নরসিংদীর মাধবদী এলাকায় শ্বশুরবাড়ি যান। শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়িতে ফেরার পথে পাশের বাড়ির লোকজন ফোন করে জানায় অজ্ঞাত এক যুবক তার ঘরে প্রবেশ করে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে যায়। এরপর লোকজন ঘরে প্রবেশ করে মোনালিসাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে। পরে রাত ১০টায় ছোট ছেলে শাহেদ হাসানকে নিয়ে ওড়না কেটে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নিচে নামিয়ে মোনালিসাকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।