শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

নবীগঞ্জে আলোচিত অরবিট হাসপাতাল তদন্তে ‘কেঁচো খুড়তে সাপ’!
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক



বিজ্ঞাপন

নবীগঞ্জের আলোচিত আউশকান্দি অরবিট প্রাইভেট হাসপাতালের শিশু-কিশোর ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে প্রতারণার ঘটনায় তদন্ত করতে গিয়ে দেখা গেছে ‘মেয়াদ নেই ট্রেড লাইসেন্স ও সিভিল সার্জনের অনুমতি পত্রের’। বিগত ২০১৭ সাল থেকেই মেয়াদোর্ত্তীর্ণ কাগজ পত্র দিয়েই চলছে হাসপাতালের কার্যক্রম।

এসব দেখে তাৎক্ষনিকভাবে আইনানুগ কোন ব্যবস্থা না নিলেও বৈধ কাগজ পত্রের বিষয়ে ইউএনও বলছেন- তিনি নাকি বিষয়টি যাচাই-বাচাই করে দেখছেন, প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বেরিয়ে আসার মতো এ ঘটনাটি নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অহরহ হুমকি-ধামকিতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন চিকিৎসা সেবা নিতে গিয়ে অর্থলোভী চিকিৎসকের প্রতারণার শিকার হওয়া শিশুর পরিবার। এ ঘটনায় আইনানুক ব্যবস্থা নিতে শিশু ইসমত নাহার জিবার মা শিরিনা আক্তার হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা সিভিল সার্জন, জেলা ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। যদিও ইতিমধ্যে হবিগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট আবু জাহির এমপির প্রস্তাবে জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভার সিদ্ধান্তক্রমে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তারা তদন্ত শুরু করেছেন।

গত সোমবার সন্ধা ৬টার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন-হাসান আউশকান্দি অরবিট হাসপাতালে যান। হসপিটালের ২য় তলায় শিশু-কিশোর ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক খায়রুল বাশারের চেম্বারে প্রবেশ করেন। এ সময় তিনি ওই চিকিৎসক ও হসপিটালের পরিচালক মহিবুর রহমান হারুনসহ কয়েকজন লোক নিয়ে চেম্বারের গ্লাস বন্ধ করে ‘তদন্ত’ করেন। তিনি নাকি তাদের কাগজ পত্র যাচাই-বাচাই করেছেন। এ সময় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া হয়। অপরদিকে শিশু ইসমত নাহার জিবার মা শিরিনা আক্তার অভিযোগ করেছিলেন চিকিৎসকের প্রতারণার ঘটনার বিচার পেতে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ-বিন-হাসান বলেন, ‘অরবিট হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্তে গেলে দেখা যায় হাসপাতালের ট্রেড লাইসেন্স ও জেলা সিভিল সার্জনের অনুমতি পত্রের মেয়াদ নেই। ২০১৭ সালেই মেয়াদ চলে গেছে। আর চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি তদন্তে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তারা তদন্ত করে দেখছেন।’

উল্লেখ্য, চিকিৎসক খায়রুল বাশার কর্তৃক সুস্থ্য শিশুকে অসুস্থ্য বানিয়ে উন্নত চিকিৎসার নামের আরেক প্রাইভেট হাসপাতালের চিকিৎসের কাছে পাঠানোর নামে প্রতারণার খবর বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারিত হলে হবিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. সুচিন্ত চৌধুরী ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করার জন্য নবীগঞ্জ উপজেলা পঃ পঃ কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন। এরই প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ উপজেলা পঃ পঃ কর্মকর্তা ডা. গোলাম মোস্তফা গত সোমবার সকালে নবীগঞ্জ হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুস সামাদকে সভাপতি ও আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ইফতেখার আলম চৌধুরী এবং মেডিকেল অফিসার ডা. জান্নাত আরা চৌধুরীকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে তারা। আজ বুধবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুর মাকে উপস্থিত থাকার জন্য নোটিশ করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।