নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগে মেয়রের পদ থেকে বরখাস্ত হওয়া টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে বিচার করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ পায়নি পুলিশ। দীর্ঘ এক বছর তদন্ত শেষে এই উপসংহারে পৌঁছেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। যুক্তরাজ্যের নির্বাচনি আদালত দুর্নীতি ও বেআইনি চর্চার অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করলেও তার বিরুদ্ধে কোনও ফৌজাদারি অভিযোগ আনা হচ্ছে না।
২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৫ সালে নির্বাচনি কোর্টের রায়ে বরখাস্ত হন সাবেক মেয়র লুতফুর রহমান। মামলার রায়ে নিলাম হয় বাড়ি। ওই সময় তাকে বরখাস্ত করা হলেও তার বিরুদ্ধে সাজা দেয়নি কোর্ট। কোর্টের নির্দেশে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণে তদন্তে নামে পুলিশ। এতে ১.৭ মিলিয়ন পাউন্ড ব্যয় করে দীর্ঘ এক বছর তদন্ত চলে। তদন্ত শেষে তারা জানায়, নির্বাচনে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত কোনও নির্দিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মতো যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ফলে লুতফর রহমানের
লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, লুতফুর রহমানের বিরুদ্ধে নির্বাচনে জালিয়াতির সাথে সম্পৃক্ত এমন কোনও সুত্র তারা খুঁজে পায়নি। কোর্টের অনুরোধে এই তদন্তে ২০জন গোয়েন্দা কর্মকর্তা অংশ নেন।
এ ব্যাপারে শুক্রবার রাতে লুৎফুর রহমানের প্রতিক্রিয়া জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে বারার ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে নির্বানহী মেয়র নির্বাচিত হওয়া লুৎফুর রহমানের জন্ম বাংলাদেশের সিলেটে। শৈশবে মা-বাবার সঙ্গে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে আসেন ও লন্ডনে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন। তার পরিবার লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস অঞ্চলের বাসিন্দা। লুতফুর রহমান বো অঞ্চলের ম্যানর প্রাইমারি স্কুলে পড়াশুনা করেছেন। স্কুল শেষ করার পর তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশুনা করেন এবং পাস করে আইন পেশায় যুক্ত হন। পরে তিনি সক্রিয় হন রাজনীতিতে। দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের মেয়র নির্বাচনে টাওয়ার হ্যামলেটসে নিজের অনুসারী অহিদ আহমদকে মেয়র পদে সমর্থনে মাঠে নামেন তিনি। ওই নির্বাচনে লুৎফুর রহমানের সমর্থিত প্রার্থী তৃতীয় স্থানে ছিলেন ভোটের ফলাফলে।