তারেক মাহমুদ:
আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের আগেই ধসে পড়েছে লাতু-জলঢুপ সড়কের সোনাই নদীর উপর নির্মিত আতুয়া-নয়াগ্রাম ব্রিজের সংযোগ সড়ক। অন্যদিকে নদী শাসনের কাজ না করায় ভাঙনের কবলে পড়েছে সোনাই নদীর পার্শ্ববর্তী এলাকা।
সংযোগ সড়কে পর্যাপ্ত মাটি ভরাট, পানি নিষ্কাশন ও পাকাকরণের কাজ অসম্পূর্ণ রেখেই যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় আতুয়া-নয়াগ্রাম ব্রিজ। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে যান চলাচলের বিঘ্ন ঘটে। পরিবহন শ্রমিকদের উদ্যোগে মাটি ভরাট করা হলেও সড়কের বিয়ানীবাজার নয়াগ্রাম অংশটি অপেক্ষাকৃত ঢালু হওয়াতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করলেও কর্তৃপক্ষ এখনো নির্বিকার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ও সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার মুড়িয়ার অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সুতারকান্দি স্থলবন্দরের সাথে মৌলভীবাজার জেলা শহরের এবং বড়লেখার সাথে বিভাগীয় শহর সিলেটের দূরত্ব কমিয়ে আনতে সোনাই নদী উপর নির্মিত হয় আতুয়া-নয়াগ্রাম ব্রিজ।
সূত্র জানায়, ২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০০ মিটার দীর্ঘ এ সেতুটির নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পায় এমএলআর ট্রেডিং নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০১৬ সালের মধ্যে ব্রিজের কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পিছিয়ে যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটির সংযোগ সড়কের নয়াগ্রাম অংশে পর্যাপ্ত মাটি ভরাট ও পাকাকরণের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ। ব্রিজের আতুয়া অংশের সংযোগ সড়কটির মাটি দেবে গিয়ে কয়েকটি স্থানে সিমেন্ট ব্লক এবং ইট সলিং উঠে গেছে। বিপদজনক ঢালু এই রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন যানবাহন চলাচল করছে। অন্যদিকে ব্রিজের বড়লেখা উপজেলাধীন আতুয়া-ইসলামপুর এলাকা নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। ব্রিজের কয়েক গজের ভিতরে অনেকটা জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়কে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। স্থানীয়দের উদ্যোগে মাটি ভরাট করে আপাতত গর্ত ভরাট করা হলেও পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থার ত্রুটি এবং বালু ব্যবহার করায় বৃষ্টির পানিতে ভেসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
নয়াগ্রামের বাসিন্দা এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী আপ্তাব আলী বলেন, সংযোগ সড়কটির কোনো অংশের কাজই সমাপ্ত না করেই ব্রিজটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। বৃষ্টি হলেই রাস্তা পিচ্ছিল আর কর্দমাক্ত হয়ে যায়। সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা উঠিয়ে উভয় অংশে আমরা মাটি ভরাট করেছি। তবে এটা কোন স্থায়ী সমাধান নয়। কর্তৃপক্ষের উচিত বিষয়টি দেখভাল করা।
এ বিষয়ে বড়লেখা উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ ভূষণ পাল মুঠোফোনে শাহবাজপুরডটকম’কে বলেন, সংযোগ সড়কটি একেবারে নতুন। কার্পেটিং করার উপযুক্ত হতে একটু সময় লাগবে। উভয় পাশের সংযোগ সড়কে স্থায়ী কাজের একটা স্কিম আমরা হাতে নিয়েছি। কিছুদিনের মধ্যেই টেন্ডার হবে। আমরা আশা করছি চলতি বছরের ডিসেম্বরের দিকে ব্রিজের আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। নদী শাসনের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদী শাসনের বিষয়টা দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো)।