সিলেটের গোলাপগঞ্জে সরকারী এমসি একাডেমী স্কুল ও কলেজ মাঠে কোরবানির পশুর হাট নিয়ে ইজারাদার ও অপর এক পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় লুটপাট ও চাঁদাবাজির অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার (১৯ আগস্ট) রাতে গোলাপগঞ্জ পশুর হাটের ইজারাদার আব্দুল কাদির বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নং ১৩, তারিখ ১৯-০৮- ২০১৮।
মামলায় উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক আকবর আলী ফখরকে প্রধান আসামী করে ২৭ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ২০ জনকে আসামী করা হয়। এছাড়া অস্ত্র আইনে পুলিশ বাদী হয়ে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেছে।
মামলার এজাহার নামীয় ৬ আসামিকে ঐদিন রাতেই ১০টি রামদাসহ গ্রেফতার করে গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন ফুলবাড়ি দক্ষিণ পাড়া গ্রামের সাহেদ আহমদের ছেলে শাকিল আহমদ (১৯), সৃত ছইদ আলীর ছেলে কয়ছর আহমদ (২৭), কুরফান আলীর ছেলে শিপন মিয়া (১৯), ফুলবাড়ি পূর্ব পাড়া (রুপশাইল) গ্রামের মো. অজি উল্লাহর ছেলে জামান আহমদ জামাল (৩২), সরস্বতী গ্রামের মৃত চাঁন মিয়ার ছেলে সাহেদ আহমদ (৩০)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামলার পর রোববার রাত ২টায় আসামিদের ধরতে সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোলাপগঞ্জ সার্কেল) রাশেদুল হক চৌধুরী ও গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (অপারেশন) দেলোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে গোলাপগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে নামে পুলিশ।
অভিযান চলাকালে রাত সোয়া তিনটায় ফুলবাড়ি দক্ষিণ পাড়া গ্রামে আকবর আলী ফখরের বাড়ীতে অভিযান চলানো হয়। এসময় মামলার ১নং আসামির ঘর থেকে ১০টি দা-সহ ৬ আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মামলার অন্যান্য আসামিরা পালিয়ে যায়। আসামিদের সাথে অস্ত্র থাকায় গোলাপগঞ্জ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মৃদুল কুমার ভৌমিক বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা (মামলা নং- ১৪ /২০-০৮-১৮) দায়ের করেন।
এই মামলায়ও আকবর আলী ফখর এবং ধৃত ৬ আসামিসহ পলাতক আরো ১৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের উভয় মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে সোমবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার ওসি (অপারেশন) দেলোয়ার হোসেন বলেন, সন্ত্রাসী কার্যকলাপে যে কেউ জড়িত হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সিলেট রেঞ্জ ডিআইজির কড়া নির্দেশ রয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার গোলাপগঞ্জ সরকারী এমসি একাডেমী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে অস্থায়ী কোরবানির পশুর হাট সরিয়ে নিতে বাধা দেয় ঐ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র পরিষদের ব্যানারে একটি পক্ষ। তারা সরকার দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ইজারাদারের কাছে চাঁদা দাবি করেছে বলে অভিযোগ করেন ইজারাদার হাজ্বী আব্দুল কাদির।
এর জের ধরে বাজার ইজারাদার পক্ষের সাথে বিকাল ৩টা থেকে ঘন্টাব্যাপী বিদ্যালয় সংলগ্ন সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষের ঘটনায় পেশাগত দায়িত্ব পালন কালে গোলাপগঞ্জ সাংবাদিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান চৌধুরী (৩২) হামলার শিকার হন। এছাড়া তাঁর মুঠোফোন ছিনিয়ে নিয়ে ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা।