রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

৫২ মণ ওজনের ‘রাজাবাবুর’ দাম ২০ লাখ
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক



বিজ্ঞাপন

নাম তার ‘রাজা বাবু’। খাবার দাবারের তালিকাও রাজার মতোই। না, এই রাজাবাবু কোন মানুষের নাম নয়। ২ হাজার ৫৪ কেজি অর্থাৎ ৫২ মণ ওজনের গরু এটি। দেশীয় পদ্ধতিতে লালন পালন করা বিশালাকৃতির এই গরু পালন করে রীতিমতো হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দেলুয়া গ্রামের কৃষক খান্নু মিয়া। জেলার সবচেয়ে বড় এই গরুটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসছেন অনেক মানুষ।এবার রাজাবাবুর দাম হাকা হচ্ছে ২০ লাখ টাকা।

খান্নু মিয়ার থাকার ঘর বলতে একটি মাত্র টিনের চারচালা। বারান্দার মতো করে তোলা হয়েছে আরেকটি ছাপড়া ঘর। এর নিচেই কৃষক খান্নু মিয়া লালন-পালন করেন গরু। তার কোনো ছেলে সন্তান নেই। ৬ মেয়ের জনক তিনি। এক সময় শুধু দুধের গাভি পালন করলেও, কয়েক বছর ধরে কোরবানি উপলক্ষে গরু মোটাতাজা করেন। গরু লালন-পালনই এখন তার মূল পেশা।

তিন বছর আগে হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান জাতের সাদা-কালো রঙের একটি ষাড় কিনেছিলেন খান্নু। তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ে ইতি আক্তার ষাড়টির নাম রেখেছিল ‘রাজাবাবু’। পরম যত্নে ইতি আর তা মা-বোনেরা মিলে লালন-পালন করেন ষাড়টি।

ইতি আক্তার জানায়, রাজাবাবু শুধু নামে নয়, তার খাবার-দাবারও সাধারণ পশুর চেয়ে আলাদা। খড়, ভূষি ছাড়াও তাকে খাওয়ানো হয় আপেল, কমলা, মাল্টা, কলা, মিষ্টি লাউ, চিড়া, গুড়সহ নানা রকমের খাবার। খাওয়া বাবদ প্রতিদিন তার পেছনে খরচ হয় দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। রাজাবাবু গরম সহ্য করতে পারে না। যেখানে তাকে রাখা হয় সেখানে তিনটি ফ্যান চলে। কোরবানির সময় ভালো দাম পেলেই তাদের পরিশ্রম স্বার্থক হবে।

খান্নু মিয়ার স্ত্রী পরিষ্কার বেগম জানান, ২ বছর খুব আদর-যত্ন করে রাজাবাবুকে লালন-পালন করা হয়েছে। একটাই আশা ঈদের সময় ভালো দাম পাবেন। গত বছর কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় রাজাবাবুকে বিক্রি করা যায়নি। কিন্তু এবার গরুটি বিক্রি করতেই হবে। তা না হলে ক্ষতির মুখে পড়বেন তারা।

প্রাণী সম্পদ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ৩ দাঁতের রাজাবাবুর বয়স ৩ বছর ১০ মাস। উচ্চতা ৬ ফুট ৬ ইঞ্চি। লম্বায় ৮ ফুট। বুকের ব্যাড় ১২ ফুট। মুখের চওড়া ৩২ ফুট ৩ ইঞ্চি। গলার ব্যাড় ৫ ফুট ও শিং ১ ফুট। এর ওজন ২ হাজার ৫৪ কেজি অর্থাৎ ৫২ মণ।

মানিকগঞ্জ জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা মো. ফরহাদুল আলম জানান, রাজাবাবুকে দেখে তিনিও প্রথম অবাক হয়েছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে গরুটি মোটাতাজা করা হয়েছে। প্রাণী সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে। যথাসময়ে গরুটি যাতে বিক্রি হয় সেজন্যও তারা চেষ্টা চালাচ্ছেন বলে জানান এই কর্মকর্তা।

জেলার সবচেয়ে বড় কোরবানির গরু রাজাবাবুকে দেখতে প্রতিদিন খান্নু মিয়ার বাড়িতে ভীড় করছেন শত শত মানুষ।

খান্নু মিয়ার মেয়ে ইতি আক্তার জানায়, এত বড় গরু বাজারে নিয়ে বিক্রি করা প্রায় অসম্ভব। তাই উপযুক্ত দাম পেলে বাড়ি থেকেই গরুটি বিক্রি করতে চান তারা। ক্রেতা চাইলে কোরবানির আগের দিন পর্যন্ত গরুটি তারা লালন-পালন করে দিতেও আগ্রহী। রাজাবাবুকে কিনতে আগ্রহী ক্রেতারা ০১৭৮৪-৮৬৪১৬১ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।