মৌলভীবাজারের জুড়ীতে আলোচিত বন্ধু পোল্ট্র্রি ফার্মে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট এর ঘটনায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুককে ভবিষ্যতের জন্য নির্দেশক্রমে সতর্ক করা হয় এবং অন্যান্য অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ (উপজেলা-২ শাখা)-এর উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম কর্তৃক ১৭ আগস্ট ২০২০ স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।
বিলম্বে প্রাপ্ত পত্রে জানা যায়, জুড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুক এর উপস্থিতিতে অজ্ঞাত কিছু লোকজনের মাধ্যমে বন্ধু পোল্ট্রি ফার্ম এর উপর বেআইনীভাবে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট করায় এবং ফার্মের পক্ষ ও বিপক্ষের লোকজন দ্বারা গণজমায়েত করার কারণে করোনা ভাইরাস (ঈড়ারফ ১৯) প্রাদুর্ভাবের সংকটময় মুহুর্তে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে তাকে নির্দেশক্রমে সতর্ক করা হলো। এছাড়া তাকে অন্যান্য অভিযোগ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হলো।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের পশ্চিম আমতৈল গ্রামে বন্ধু পোল্ট্রি ফার্ম নামক একটি লেয়ার মুরগীর খামারে গত ১ মে রাতে হামলার ঘটনায় খামার মালিক দীনবন্ধু সেন ১২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো ১৫/২০জনকে আসামী করে জুড়ী থানায় একটি মামলা (নং-১, তারিখঃ ০২.৫.২০২০ইং, ধারাঃ ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩৭৯/৪২৭/১১৪/৫০৬) দায়ের করেন। জুড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুককে উক্ত মামলায় প্রধান আসামী করা হয়।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক, মৌলভীবাজার কার্যালয়ের স্মারক নং- ২২৬, তাং- ০৪/০৫/২০২০ সূত্রে গত ০৫/০৫/২০২০ তারিখে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ (উপজেলা-২ শাখা) এর উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ০১/০৫/২০ রাত ১০ টায় তাঁর নেতৃত্বে বন্ধু পোলট্রি ফার্ম-এ হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট, ধানকাটার হার্ভেস্টার মেশিনের যন্ত্রপাতি ভাংচুর এবং করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে বিশাল গণজমায়েত সৃষ্টি করার কারণে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ [উপজেলা পরিষদ (সংশোধিত) আইন ২০১১ ধারা সংশোধিত] এর ১৩(খ) ও (গ) ধারায় অভিযুক্ত করে একই আইনের ১৩ ধারা অনুযায়ী কেন তাঁকে তাঁর স্বীয় পদ হতে অপসারনের কার্যক্রম শুরু করা হবে না এ মর্মে ১৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশক্রমে বলা হয়।
জুড়ী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুক কর্তৃক গত ১২ মে প্রদত্ত জবাব মন্ত্রণালয়ের কাছে সন্তোষজনক না হওয়ায় তাকে স্বীয় পদ থেকে অপসারণের লক্ষ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য সিলেট বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ প্রদান করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ (উপজেলা-২ শাখা)। এতে জুড়ী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মোঈদ ফারুক এর বিরুদ্ধে বর্ণিত অপরাধের কারণে উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ [উপজেলা পরিষদ (সংশোধন) আইন ২০১১ ধারা সংশোধিত] এর ১৩ ধারা অনুযায়ী তাকে তার স্বীয় পদ হতে অপসারণের লক্ষ্যে উপজেলা পরিষদ সদস্য ও মহিলা সদস্যদের (অপসারণ, অনাস্থা ও পদ শূন্যতা) বিধিমালা ২০১৬ অনুযায়ী তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়।
যার প্রেক্ষিতে ০২/৭/২০২০ইং সরেজমিন তদন্ত করেন দায়িত্ব প্রাপ্ত তদন্ত কর্মকর্তা সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মো: মশিউর রহমান এনডিসি। উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে বাদী পক্ষের বক্তব্য নেন এবং উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে সরেজমনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-ইমরান রুহুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তদন্ত শেষে তিনি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠান।