শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

কুলাউড়ায় খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাতভর কিশোর নির্যাতন
নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক



বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় এক ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে চুরির অপবাদে মো. মুস্তাফিজ (১৬) নামে এক কিশোরের উপর রাতভর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। চুরির অপবাদে রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা অবধি খুঁটির সঙ্গে হাত বেঁধে রাখা হয় ওই কিশোরের। এ সময় তার ওপর নির্যাতন করেন ওই ইউপি সদস্য।


গত ১৪ মে কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন কিশোরের পরিবারের সদস্য ও প্রত্যক্ষদর্শীরা। নির্যাতনের শিকার মো. মুস্তাফিজ (১৬) কুলাউড়ার টিলাগাও ইউনিয়নের চান্দপুর গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।

মুস্তাফিজের চাচা বলেন, গত ১৪ মে ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া তার দলবল নিয়ে আমার ভাতিজাকে চুরির অপবাদ দিয়ে সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সকাল আটটা পর্যন্ত এক গ্রাম পুলিশের বাড়ির বারান্ধায় বেঁধে রেখে নির্যাতন চালায়। তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এখনো সে সেরে ওঠেনি।

মুস্তাফিজের চাচা এবং স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নির্যাতনের সময় স্থানীয়রা শিশুটিকে নির্যাতন না করার জন্য অনুরোধ করলেও ইউপি সদস্য তা মানেননি। মুস্তাফিজের চাচা বলেন, আমাদের পরিবার গরীব। পুলিশের কাছে গিয়ে যে অভিযোগ করবো সেই সাহসও পাচ্ছিনা।

তিনি বলেন, মুস্তাফিজ এখনো রাতে ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে আমাকে আর মারবেন না বলে ঘুম থেকে উঠে পড়ে। এই ঘটনার পর থেকে সে আর স্বাভাবিক নয়। কারো সঙ্গে কথা বলে না। একা একা নিজে নিজে কথা বলে। স্থানীয়ভাবে সমাধানের কথা বলায় আমরা সাংবাদিকদেরও এ ঘটনা জানাইনি কিন্তু আজ পর্যন্ত ইউপি সদস্য এ বিষয় নিয়ে কোনো কথাই বলছেন না।


অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া জানান, ‘আমার ওয়ার্ডের ব্যবসায়ী কাইয়ুমের চুরি যাওয়া সাইকেলটি পৃথিমপাশার ছৈদল বাজারে আ‌ছে এমন খবর জে‌নে সেখানে গ্রাম পুলিশসহ যাই। কিশোর মুস্তাফিজের উশৃঙ্খল আচরণ ও যাতে পালিয়ে না যায় সেজন্য তাকে সেখান থেকে হাত বেধে আশ্রয়গ্রামে একটি দোকানে এনে রাখা হয়, তবে কোন মারধরের ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি সালিশি বৈঠকে নিষ্পত্তির জন্য চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি তারিখ নির্ধারণ করে দেন।

এ বিষয়ে টিলাগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক জানান, চুরি যাওয়া সাইকেলটি গত ১৪ মে পৃথিমপাশার ছৈদলবাজার থেকে উদ্ধার করা হয় এবং এসময় এ ঘটনায় জড়িত আটক মুস্তাফিজকেও সেখান থেকে হাত বেঁধে আশ্রয়গ্রামে নিয়ে আসেন ইউপি সদস্য বাদশা মিয়া। মুস্তাফিজের অভিভাবক তাকে ছেড়ে দেওয়ার ও বিষয়টি নিষ্পত্তির অনুরোধ করেন। মুস্তাফিজকে ছেড়ে দেয়ার জন্য বাদশা মিয়াকে বললে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে ৩ জুন বিষয়টি সালিশী বৈঠকে নিষ্পত্তি করার তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এর আগের দিন বিষয়টি বানচালের উদ্দেশ্যে একটি গোষ্ঠি ফেসবুকে ছবিটি ভাইরাল করেছে। তিনি জানান, প্রশাসন বিষয়টি আমার কাছে জানতে চাইলে আমি প্রশাসনকে ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার জন্য বলি।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, বাই সাইকেল চুরির ঘটনায় এক কিশোরকে স্থানীয়রা আটক করেছে শুনেছিলাম। এ বিষয়টি খোঁজখবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।


উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী এ ব্যাপারে জানান, ঘটনাটি শুনেছি। এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। কিশোরে পরিবার সহযোগিতা চাইলে সবধরনের আইনী সহযোগিতা করা হবে।