রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখায় সাংবাদিকের মুঠোফোন ফিরিয়ে দিয়ে সততার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন অটোরিকশা চালক
নিজস্ব প্রতিবেদক

নিজস্ব প্রতিবেদক



বিজ্ঞাপন

মৌলভীবাজারের বড়লেখায় অটোরিকশায় ফেলে যাওয়া এক সাংবাদিকের মুঠোফোন ফিরিয়ে দিয়ে সততার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ফয়জুর রহমান নামে এক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক। ফয়জুর উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের বড়ময়দান গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে। এলাকার সবাই তাঁকে ফকির ফয়জুর রহমান নামেই চেনেন।

জানা গেছে, দৈনিক সবুজ সিলেট ও সিলেটভিউ২৪ডটকম’র বড়লেখা উপজেলা প্রতিনিধি এবং শাহবাজপুরডটকম’র চিফ রিপোর্টার সাংবাদিক এজে লাভলু ২৭ আগস্ট সোমবার রাত সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার কাঠালতলী থেকে সিএনজি চালিত অটোরিকশাযোগে বড়লেখা শহরে যাচ্ছিলেন। এ সময় অসাবধানতাবশত তাঁর প্যান্টের পকেট থেকে ব্যবহৃত নোকিয়া মডেলের একটি মুঠোফোন গাড়িতে পড়ে যায়। মুঠোফোনটি গাড়িতে পেয়ে নিজের কাছে রেখে দেন ফয়জুর রহমান। কিছুক্ষণ পর সাংবাদিক এজে লাভলু মুঠোফোনটি বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুজি করে না পেয়ে মুঠোফোন নম্বরে কল দেন। ওপাশ থেকে ফোন ধরেন অটোরিকশাচালক ফয়জুর রহমান। এরপর ফয়জুর তাঁর পরিচয় দিয়ে মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেবেন বলে তাঁকে জানান। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর রাতেই সাংবাদিক এজে লাভলু বিষয়টি তালিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাসকে জানান। এরপর তিনি ও তাঁর ছোট ভাই সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত কান্তি দাস ফয়জুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দেবেন বলে তাদের জানান।

২৮ আগস্ট মঙ্গলবার সকাল ৮টায় ফয়জুর রহমান মুঠোফোনটি ফিরিয়ে দিতে চলে আসেন এজে লাভলু’র বাড়িতে। এরপর মুঠোফোনটি তুলে দেন তাঁর হাতে।

অটোরিকশা চালক ফয়জুর রহমান বলেন, ‘কারও কোনো জিনিসের প্রতি আমার লোভ নেই। যখন মোবাইলটি গাড়িতে পেয়েছি, তখন প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার কথা চিন্তা করি। রাতে আমাকে আমাদের ইউনিয়নের (তালিমপুর) চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস ও তাঁর ছোট ভাই সাবেক ইউপি সদস্য সুজিত কান্তি দাস কল দিয়ে মোবাইলটি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছেন।’

সাংবাদিক এজে লাভলু বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ফয়জুর রহমান ভাই আমাকে কল দিলেন। আমার বাড়ির ঠিকানা জানলেন। তারপর সোজা ফোনটি আমার বাড়িতে নিয়ে এলেন। পরে ফোনটি আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। মুঠোফোনটি খুঁজে না পেয়ে প্রথমে আমি আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু ফয়জুর রহমান ভাইয়ের মতো সৎ মানুষের কারণে আজ ফোনটি ফিরে পেয়েছি। তা নাহলে পেতাম না। হারানো ফোনটি ফিরিয়ে দেওয়ায় ফয়জুর রহমান ভাই এবং তা ফিরে পেতে সহযোগিতা করায় তালিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস ও সুজিত কান্তি দাস দাদার কাছে চির-কৃতজ্ঞ।’

তালিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস বলেন, ‘অটোরিকশা চালক ফয়জুর রহমান একজন ভালো মানুষ। তিনি আমার পরিচিত। রাতে সাংবাদিক এজে লাভলু মুঠোফোন হারানোর বিষয়টি জানালে আমি দ্রুত ফয়জুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি ফোনটি ফিরিয়ে দিবেন বলেছিলেন। ফোনটি ফিরিয়ে দিয়ে ফয়জুর সততার অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। আমাদের সমাজে ফয়জুরের মতো সৎ মানুষের খুব প্রয়োজন। তাহলে দেশ বদলে যাবে।’