রাজধানী ঢাকার ডেমরার সারুলিয়ায় একটি বাড়িতে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা ভাড়াটিয়া বেশে ঢুকে বৃদ্ধ দম্পতিকে অচেতন করে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে গেছে। অচেতন ওই দম্পতি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। ২৬ আগস্ট রোববার এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- আব্দুস ছাত্তার (৭৫) ও সাহেরা বেগম (৬০)। নিহত এই দম্পতির গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার নবীনগরে। ময়নাতদন্তের জন্য তাদের লাশ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত দম্পতির ছেলে আমিনুল ইসলাম জানান, রাজধানীর ডেমরা এলাকার পূর্ব বক্সনগর এলাকায় তাদের বাসা। ঈদ উদযাপন করতে তার স্ত্রী-সন্তান ব্রাহ্মণবাড়ীয়ায় যায়। এ সময় তার সঙ্গে ডেমরার বাসায় মা-বাবা ছিলেন। গতকাল শনিবার (২৫ আগস্ট) কয়েকজন নারী বাসা ভাড়ার নেওয়ার কথা বলে ভেতরে ঢোকে। তাদের একজন স্বামীকে নিয়ে বাসায় থাকার কথা বলে চলে যায়।
এদিকে নিহত দম্পতির ছেলে আমিনুল ইসলাম অচেতন বাবা-মাকে নিয়ে হাসপাতালে থাকায় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা তাদের বাসা থেকে কী কী নিয়ে গেছে তা জানা যায়নি। বাসায় না গেলে খোয়া যাওয়া মালামাল সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
প্রতিবেশীদের বরাদ দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আজ (রবিবার) সকালে আমি কর্মস্থলে চলে যাই। সকালে ওই নারীরা আবার বাসায় আসে। তারা আমার বাবা-মাকে মাথায় মেহেদি দিয়ে দেয়। বেশকিছু সময় পর তারা চলে গেলে প্রতিবেশীরা বাসায় ঢুকে বাবা-মাকে অচেতন অবস্থায় পেয়ে আমাকে জানায়। আমি বাসায় এসে দেখি বাবা-মা দুজন দুই রুমে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। ঘরের মালামাল সব এলোমেলো। পরে আমি দ্রুত তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে ভর্তি করি।’
ঢাকা মেডিক্যাল সূত্র জানায়, দুপুরের দিকে ডেমরা এলাকা থেকে অচেতন অবস্থায় বৃদ্ধ ওই দম্পতিকে এনে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা ৭টার সাহেরা বেগম মারা যান। আর রাত পৌনে ৮টার দিকে মারা যান আব্দুস ছাত্তার।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢামেক হাসপাতারের ক্যাম্প পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. বাবুল মিয়া বলেন, ‘হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুজনের মৃত্যু হয়। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে জানানো হয়েছে।’
ডেমরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি। পুলিশের একটি টিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি।’
পুলিশের যাত্রাবাড়ী জোনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানার পর একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছি। আরেকটি টিম ঢাকা মেডিক্যালে গেছে। আমি নিজেও ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। প্রকৃত ঘটনা জেনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।’