রবিবার, ৭ জুলাই ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখায় স্বাস্থ্য সহকারী নিয়োগে অনিয়ম, অন্য উপজেলার বাসিন্দাকে নিয়োগের সুপারিশ



বিজ্ঞাপন

এ.জে লাভলু:: মৌলভীবাজার সিভিল সার্জনের কার্যালয়ের অধীনে বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে নিয়োগবঞ্চিতরা গত ২ জুলাই জেলা সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

নিয়োগবঞ্চিতদের অভিযোগ, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ততে বলা হয়, স্বাস্থ্য সহকারী পদে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রার্থীকে সংশ্লিষ্ট (পুরাতন) ওয়ার্ডের বাসিন্দা হতে হবে। কিন্তু বর্ণি ইউনিয়নের সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত পুষ্পিতা চক্রবর্তী (রোল নং-১৮০০২৭১২) তাদের ওয়ার্ডের বাসিন্দা নয়। তার বাড়ি রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামে। তিনি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্ত ভঙ্গ করে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেখিয়ে নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন।

তবে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগের জন্য চূড়ান্তভাবে সুপারিশপ্রাপ্ত পুষ্পিতা চক্রবর্তীর বাবা বলছেন, তার মেয়ে বর্ণি ইউনিয়নের বর্তমান ৮ নং (সাবেক ৩নং) ওয়ার্ডের ভোটার। তার জন্মসনদসহ সব প্রমাণ পত্র আছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২০ আগস্ট মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের শূন্য পদে নিয়োগের জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হয়। গত ৭ জুন লিখিত পরীক্ষা এবং ১১ জুন মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। গত ২২ জুন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উর্ত্তীণদের চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়। এতে বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের সাবেক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের স্বাস্থ্য সহকারী (শূন্য) পদে পুষ্পিতা চক্রবর্তী নামে একজনকে চূড়ান্তভাবে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ কমিটি।

নিয়োগবঞ্চিত রুপন চন্দ্র দাস, দেবান্তোষ দাস, স্বরুপ দাস ও অয়ন চন্দ্র দাস বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, এই নিয়োগ বিধি অনুযায়ী হয়নি। কারণ যিনি স্বাস্থ্য সহকারী পদে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, তার বাড়ি আমাদের ওয়ার্ড নয়। ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা অনুযায়ী, পুষ্পিতা চক্রবর্তী বাড়ি রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের নওয়াগাঁও গ্রামে। বড়লেখা উপজেলার ১নং বর্ণি ইউনিয়নের ভোটার তালিকায় পুষ্পিতার কোনো নাম নেই। কিন্তু পুষ্পিতা চক্রবর্তী তার প্রকৃত ঠিকানার তথ্য গোপন করে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতারণা করে বড়লেখা উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের সাবেক ৩নং ওয়ার্ডে স্বাস্থ্য সহকারী শূন্য পদে আবেদন করে চূড়ান্তভাবে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছেন। এমনকি ভবিষ্যতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য পুষ্পিতা ভোটার এলাকা রাজনগর উপজেলা থেকে বড়লেখা উপজেলায় স্থানান্তর করে নিয়েছেন।

নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত পুষ্পিতার বাবা ধনেষ চক্রবর্তী বলেন, আমার মেয়ে পুষ্পিতা চক্রবর্তী শারিরীক প্রতিবন্ধী। যারা অভিযোগ করেছেন যে তার বাড়ি বর্ণি ইউনিয়নে নয় তারা হয়ত প্রতিহিংসামূলকভাবে এই অভিযোগ করেছেন। আমার মেয়ের বিয়ে রাজনগর উপজেলায় হয়েছিল। স্বামীর ঘরে সে এক বছরের মতো ছিল। পরে আমার এখানে স্থায়ীভাবে চলে আসছে। বর্তমানে বর্ণি ইউনিয়নের বর্তমান ৮ নং (সাবেক ৩নং) ওয়ার্ডে তার নাগরিকত্ব আছে। সে এখানে জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে ভোটও দিয়েছে। এখানের বাসিন্দা হিসাবে সে প্রতিবন্ধী ভাতাও পাচ্ছে। সব প্রমাণ পত্র আছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদ্বীপ বিশ্বাস বৃহস্পতিবার বিকেলে জানান, অভিযোগ পেয়েছেন। মেয়ের পিতার বাড়ি বর্ণি ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে বলে শুনেছেন। এরপরও বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখবেন।

মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দীন মুর্শেদ জানান, স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এখনো নিয়োগ চূড়ান্ত হয়নি। শর্তাবলী লঙ্ঘনের অভিযোগ পেয়েছেন। পুলিশ প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।