মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

স্বর্ণ উদ্ধারে সহায়তায় ‘আলোচিত সুলতানকে’ পরিবেশমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যান যুবলীগ নেতা কামাল



বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: পরিবেশমন্ত্রী ও মৌলভীবাজার-১ আসনের এমপি মো. শাহাব উদ্দিনের সঙ্গে আলোচিত দুবাইপ্রবাসী সুলতান আহমদ হিরনের একটি ছবি ফেসবুকে ঘুরছে। ছবিতে সুলতানের ভাই যুবলীগ নেতা ফারুক মিয়ার পাশাপাশি বড়লেখা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেনও রয়েছেন। এনিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছরের আগস্টে স্বর্ণ উদ্ধারে সহযোগিতার জন্য দুবাইপ্রবাসী সুলতানকে মন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন বড়লেখা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন। তখনই ওই ছবিটি তোলা হয়েছিল।

অবশ্য সুলতানকে পরিবেশমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন বড়লেখা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন। তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাতে বলেন, গত বছরের আমি একটি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় গিয়েছিলাম। তখন সুলতান ও তার ভাই ফারুকের সাথে আমার দেখা হয়। এসময় সুলতান জানিয়েছিলেন, বিদেশ থেকে তিনি এক যুবকের সাথে স্বর্ণ দেশে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ওই যুবক স্বর্ণগুলো তার স্বজনদের কাছে না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেন। তখন তারা স্বর্ণ উদ্ধারে সহযোগিতার জন্য আমাদের এলাকার এমপি পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের কাছে জন্য যেতে চান। ঘটনা শুনে আমিও তাদের সাথে গিয়েছিলাম। মন্ত্রী ঘটনা শুনে স্বর্ণের বৈধ কাগজপত্র দেখে পুলিশকে সহযোগিতার জন্য বলেছিলেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নষ্ট করতে একটি অশুভ চক্র ষড়যন্ত্র করছে। একইসাথে পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন ও আমার চাচা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সুন্দরের বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।

এদিকে বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের দাবি, সুলতান আহমদ হিরন পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপিকে ‘ব্যবহার’ করে সাটুরিয়া থানায় এক যুবককে মারধর করে স্বর্ণের টাকা উদ্ধার করেছেন। এমনকি সৎ ও সজ্জন হিসেবে পরিচিত পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনকে ‘বিতর্কিত’ করতে একটি মহল নানা ষড়যন্ত্র করছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বলেন, পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন সহজ-সরল, বিনয়ী মানুষ হিসেবে সবাই চেনেন। যে কেউ তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন। ছবি তুলতে পারেন। যে কারও বিপদ-আপদে তিনি পাশে দাঁড়ান। সহযোগিতা করেন। এখন কেউ যদি মন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলে কিংবা মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে কোনো অপরাধ করে তবে তার জন্য মন্ত্রী দায়ী নন। তারা বলেন, মন্ত্রীকে বিতর্কিত করতে একটি মহল নানা ষড়যন্ত্র করছে। সুলতানের সঙ্গে মন্ত্রীর যে ছবি ভাইরাল হয়েছে সেটা গতবছরের তোলা। আর সুলতান এলাকার ছেলে হিসেবে মন্ত্রীর সঙ্গে হয়ত ছবি তুলেছেন। এখন সুলতান কোনো অপরধারে সঙ্গে যুক্ত হলে তার দায় তো মন্ত্রীর নয়। এটা ষড়যন্ত্রের একটা অংশ বলে আমরা মনে করি।

সম্প্রতি থানায় পুলিশের সামনে দুবাইপ্রবাসী সুলতান আহমদ হিরনের মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি গত বছরের আগস্ট মাসে সাটুরিয়া থানায় ঘটেছে। এ ঘটনার খবর গত ২৪ মার্চ একটি জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনে, সুলতানকে ‘স্বর্ণপাচারকারী চক্রের নেতা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এরপর ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

সুলতান আহমদ হিরন বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের কাশেমনগর গ্রামের মৃত আমিন আলীর ছেলে। সুলতান স্বর্ণ পাচার মামলায় গত বছরের ডিসেম্বর মাসে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সম্প্রতি তিনি জামিনে বেরিয়েছেন। তবে স্বজনদের দাবি, সুলতান ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে জেলে গেছেন।

সুলতানের বড়ভাই যুবলীগ নেতা ফারুক মিয়া জানিয়েছেন, বড়লেখা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন তাদের মন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সুলতান তার স্ত্রী ও আমার এক বোনের মেয়ের জন্য সাটুরিয়ার এক যুবকের সঙ্গে বিদেশে থেকে স্বর্ণ পাঠিয়েছিলেন। কথা ছিল, ওই যুবক দেশে স্বর্ণগুলো আমাদের কাছে দেবেন। কিন্তু তিনি দেননি। সোনা তার কাছে রেখে দেন। তারও ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কিছুদিন পরে সুলতান দেশে এসে আমাদের এলাকার মন্ত্রী শাহাব উদ্দিনের কাছে গিয়ে সোনা উদ্ধারে সহযোগিতা চান। উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক কামাল আমাদের মন্ত্রীর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমিও ছিলাম। পরে মন্ত্রী স্বর্ণগুলো বৈধ জেনে ফোনে সাটুরিয়া থানা পুলিশকে আমাদের আইনী সহযোগিতা করতে বলেন। পুলিশ স্বর্ণগুলো উদ্ধার করতে না পারলেও ওই যুবকের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে দিয়ে বিষয়টি সমাধান করেছে। তার দাবি, তার ভাই সুলতান স্বর্ণপাচারকারী নয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে স্বর্ণপাচারকারী বানানো হয়েছে।