শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

জন্মান্ধ নিরঞ্জনের গানেই জীবন-জীবিকা



বিজ্ঞাপন

এ.জে লাভলু:: ‘আমি অন্ধগো মানুষ, দেখার শক্তি নাই; সবাইরে দিছে চক্ষু, আমায় দেয় নাই দয়াল’-এভাবে নিজের লেখা গানে চোখ না থাকার কষ্টের কথা ফুটিয়ে তুলেছেন জন্মান্ধ নিরঞ্জন।

নিরঞ্জন ব্যানার্জী (২০)। জন্ম থেকেই তার দুটি চোখে আলো নেই। তবে স্রষ্টা যেন তার কণ্ঠে সব সুর ঢেলে দিয়েছেন। তাইতো সবাইকে তিনি গান শুনিয়েই মুগ্ধ করেন। আর এভাবে গান গেয়েই চলছে তার জীবন-জীবিকা।

নিরঞ্জন মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নের পাথারিয়া চা বাগানের চা শ্রমিক মেঘনাথ ব্যানার্জীর ছেলে।

সম্প্রতি মাধবকুণ্ডে পেয়ে কথা হয় নিরঞ্জন ব্যানার্জীর সঙ্ঘে। আলাপকালে তিনি বলেন, আমি জন্ম থেকেই অন্ধ। বাবা-মা চা শ্রমিক। তারা আমাকে কষ্ট করে বড় করেছেন। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে আমি সবার বড়। আমার ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে। বাকি ভাই-বোনেরা লেখাপড়া করছে।

তিনি বলেন, লেখাপড়ার ইচ্ছা ছিলো। কিন্তু চোখে দেখি না। তাই আর লেখাপড়া করতে পারেনি। কাম-কাজও পারিনা। একটু গান গাইতে পারি। ২০১০ সাল থেকে গান গেয়ে আয়-রোজগার করি। তাই বাবা আমাকে প্রায় মাধবকুণ্ডে দিয়ে যান। বিকেলে আবার এসে নিয়েও যান। মাধবকুণ্ডে ঘুরতে আসা পর্যটকদের গান গেয়ে শুনাই। নিজের লেখা একটি গানের পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্পীদের গান গেয়ে শুনাই মানুষকে। গান শুনে তারা খুশি হয়ে যা টাকা দেন, তাতে কোনোমতে চলে। কোনো কোনো দিন ১৫০-২০০ টাকা আয় হয়। মানুষ বেশি থাকলে কখনো ৩০০ টাকাও আয় হয়। সব টাকা বাবার হাতে তুলে দিই।

নিরঞ্জন বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধি হিসেবে সরকার ভাতা দিচ্ছে। একটা ঘরও পেয়েছি। জীবনে কোনো স্বপ্ন আছে কিনা জানতে চাইলে নিরঞ্জন বলেন, বড় কোনো স্বপ্ন নেই। আপনারা আমার গান শুনে যে টাকা দেন তাও তো অনেক বেশি পাওয়া।

নানা কথা শেষে আবারো গান ধরেন নিরঞ্জন। তার কণ্ঠের জাদুতে মুগ্ধ অনেকেই আশপাশে ভিড় জমায়।