আব্দুল্লাহ আল নোমান, ফেঞ্চুগঞ্জে:
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৩ (দক্ষিণ সুরমা-বালাগঞ্জ-ফেঞ্চুগঞ্জ) আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান সাংসদ আওয়ামী লীগের মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েস। অন্যদিকে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপির শফি আহমদ চৌধুরী।
দেড় যুগ ধরে এই আসন তাদের দু’জনের নেতৃত্বে চলেছে। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাহমুদ উস সামাদ কয়েস বিএনপির প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরীকে ৩৬ হাজার ৯১৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবার নির্বাচিত হন। আর বিএনপিবিহীন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন কয়েস। এবারের নির্বাচনেও তাঁরা দু’জন মুখোমুখি। তবে এবার হিসাব অনেক। আর এ হিসেবে রসদ জোগাচ্ছেন জাতীয় পার্টি ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থীরা। দুই বলয়ের দু’জন প্রার্থী রয়েছেন। ভোট কাটাকাটি হবে দু’জনেরই।
এ আসনে মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী কয়েসের সঙ্গে এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১০ জন প্রার্থী। আওয়ামী লীগের দক্ষিণ সুরমা বলয়ের বেশিরভাগ নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ হয়ে এবার মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত চমক দেখান কয়েস এমপিই। তিনি দলীয় টিকিটের পাশাপাশি মহাজোটেরও মনোনয়ন পান। কিন্তু এখনো আওয়ামী লীগের একটি অংশ কয়েসের বিপক্ষে অবস্থানে রয়েছে। এদের কাছে টানাটাই হচ্ছে তাঁর বড় চ্যালেঞ্জ। তাঁর আমলে ফেঞ্চুগঞ্জে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকায় নতুন সার কারখানা স্থাপন করা হয়েছে। এর বাইরে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এই উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেই ভোটারের কাছাকাছি যাচ্ছেন কয়েস।
এদিকে মহাজোট প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী হলেও এ আসনটি তাকে এককভাবে ছাড় দেয়নি জাতীয় পার্টি। এখানে জাতীয় পার্টি থেকে লাঙল প্রতীকে প্রার্থী হয়েছেন জেলার সদস্য সচিব উসমান আলী। এ আসনটি এক সময় জাতীয় পার্টির ঘাঁটি ছিল। বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে। ফলে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এই আসনে নিজের বাক্সে ভোট টানবেন তা বলাই যায়। উসমান আলীও জোরেশোরে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
শফি আহমদ চৌধুরী ২০০১ সালে এ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারো মনোনয়ন জোট-ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরী। তাঁর পক্ষে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ মাঠে একাট্টা রয়েছেন। পাশাপাশি তিন থানা বিএনপিসহ ঐকফ্রন্টের নেতারা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তবে সব কিছু ছাপিয়ে নতুন করে ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন শফি আহমদ চৌধুরী। এ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হয়েছেন জেলার যুগ্ম সম্পাদক মো. দিলওয়ার হোসাইন। মাদরাসা কেন্দ্রিক ভোট খেলাফত মজলিসের ঘরে গেলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারেন শফি আহমদ চৌধুরী। অপরদিকে শফি আহমদ চৌধুরী অভিযোগ, পুলিশ নির্বাচনের পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করতেই বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে নেতাকর্মীরা ঘরছাড়া।
এ আসনে অন্যান্য প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- এমএ মতিন বাদশা (হাতপাখা), হাফিজ আতিকুর রহমান (রিকশা)। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ লাখ ২২ হাজার ২৯৩ জন।