সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ খ্রীষ্টাব্দ | ৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখায় চার গ্রামের রাস্তা রক্ষায় ৩৫ লাখ টাকায় ইউপি চেয়ারম্যানের গাইডওয়াল নির্মাণ



বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের চারটি গ্রামের মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা একটি কাঁচা রাস্তা। প্রতিবছর বর্ষায় হাওরের ঢেউয়ে রাস্তাটি ভেঙে পড়ত। এতে এলাকাবাসীকে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হত। তবে এবার এই দুর্ভোগ লাঘবে এগিয়ে এসেছেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম। তিনি ভাঙন ঠেকাতে ব্যক্তিগত অর্থায়নে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ গাইডওয়াল নির্মাণ করে দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এটি বাস্তবায়িত হলে তাদের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বড়লেখার সুজানগর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাড্ডা গ্রামের ফয়সল আহমদের বাড়ির সামনা থেকে দশঘরি ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাচা রাস্তা রয়েছে। এটি ইউনিয়নের পশ্চিমাঞ্চলের দশঘরি, খাগফারা, রাঙিনগর ও বাড্ডা গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের চলাচলের একমাত্র পথ। পাশাপাশি, এই রাস্তা হাকালুকি হাওরের জলা, ফারজলা, চৌলা, ফাটাবিলসহ বিভিন্ন জলমহাল ও বোরো ক্ষেতে যাতায়াতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। বন্যার সময় হাওরের প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে এই কাঁচা রাস্তা প্রতি বছর কয়েকবার ভেঙে পড়ে, যার ফলে এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হন। মাঝে মধ্যে সরকারি বরাদ্দে রাস্তার সংস্কার করা হলেও বর্ষার পানিতে তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তার দক্ষিণ পাশের নিচু স্থানের কারণে ঢেউয়ের জোরে মাটি ভরাট করলেও তা টিকে থাকতে পারেনা। মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে ইউপি চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম নিজস্ব অর্থায়নে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় গাইডওয়াল নির্মাণ ও মাটি ভরাটের উদ্যোগ নেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়েছে। ১০ ইঞ্চি চওড়া এবং কোথাও কোথাও ৮ ফুট উঁচু এই গাইডওয়াল নির্মাণে প্রায় ৩৫ লাখ টাকা ব্যয় হচ্ছে। বর্তমানে প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। বর্ষাকালের কারণে বাকি ২০ শতাংশ কাজ শেষ করতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।

স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার শহিদ মিয়া, দশঘরি গ্রামের মুরব্বি শায়েস্থা মিয়া, রুশন আলী, কয়েছ মিয়া, রাঙিনগর গ্রামের রহমত আলী ও স্কুল শিক্ষক ছালেখ উদ্দিনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, ইউপি চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তার মাটি ভরাট এবং গাইডওয়াল নির্মাণ করে দিচ্ছেন। তারা বলেন, প্রতি বছর বর্ষার সময় রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় অন্তত ২-৩ মাস এলাকার ছেলে-মেয়েরা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় যেতে পারে না। এতোদিন এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানে কেউ উদ্যোগ নেননি। তাঁরা আরও জানান, অতীতে কোনো চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত টাকায় জনগণের এমন কষ্ট লাঘবে কাজ করেছেন বলে তাদের জানা নেই। বদরুল ইসলামের এই উদ্যোগে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগের অবসান ঘটবে বলে তাঁরা আশা প্রকাশ করেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা এই রাস্তার সুফল সবচেয়ে বেশি ভোগ করবে।

প্যানেল চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম জানান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম নিজস্ব অর্থায়নে রাস্তাটির মাটি ভরাট এবং গাইডওয়াল নির্মাণের কাজ করছেন। কাজটির প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। অবশিষ্ট অংশ বর্ষার কারণে সম্পূর্ণ হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তিনি বলেন, চেয়ারম্যানের এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগের ফলে রাস্তাটি ভবিষ্যতে আরসিসি ঢালাইয়ের উপযোগী হয়ে উঠবে। যদি এলজিইডি থেকে প্রকল্প নেওয়া হয়, তাহলে কয়েকটি গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির স্থায়ী সমাধান সম্ভব হবে।