সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

সিসিক নির্বাচন: আরিফের সিদ্ধান্ত চাপে ফেলেছে বিএনপিপন্থী কাউন্সিলরদের



বিজ্ঞাপন

লাতু ডেস্ক:: সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচন থেকে বিএনপি নেতা মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সরে দাঁড়ানো নতুন করে চাপে ফেলেছে বিএনপিপন্থী কাউন্সিলরদের। নির্বাচনে প্রার্থী হতে যাঁরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন তাঁদের কেউ কেউ এখন আগের অবস্থানে নেই। সম্ভাব্য নতুন প্রার্থীরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বে। দুজন প্রার্থী সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়ে আরিফুলও বসে নেই। দলীয় কাউন্সিল প্রার্থীদের নিবৃত্ত করতে তিনি তৎপর হয়েছেন। এরই মধ্যে একজন প্রার্থীকে নির্বাচন থেকে বিরত করেছেন। বাকিদেরও ঠেকাতে তৎপরতা চালাচ্ছেন।

আরিফুল হক চৌধুরী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণার পর তাঁর স্ত্রী শ্যামা হক চৌধুরী প্রার্থী হচ্ছেন-এমন একটি খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে এ খবর সত্য নয় বলে জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। এ ছাড়া আরিফুল হক নির্বাচন না করলে প্রবাসী নেতা ও সাবেক সিলেট পৌরসভার মেয়র বাবরুল হোসেন বাবুল নির্বাচনে অংশ নেবেন বলে শোনা গেলেও শেষ মুহূর্তে তিনিও নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, দলীয় নির্দেশনার পরও সিলেট সিটি করপোরেশনের বিএনপিপন্থী সব কাউন্সিলররা নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।

পরে দলের চাপ বাড়লে নিজের অবস্থান থেকে সরে এসে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন না করার ঘোষণা দেন সিসিকের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তবে বাকিরা এখনো তেমন ঘোষণা দেননি। তাঁরা নির্বাচন করতে চান। কিন্তু দলীয় নির্দেশনার পর মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তে তাঁদের কারো কারো মনোবলে চিড় ধরিয়েছে। তাঁদের কেউ কেউ মনোনয়ন ফরম কিনেছেন।

একজন জমাও দিয়েছেন। আর বাকিরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। বিএনপিপন্থীদের মধ্যে প্রথমবারের মতো যাঁরা প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তাঁরাও দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন।

সিসিকের ২৭ জন সাধারণ কাউন্সিলরের মধ্যে বিএনপিপন্থী মূলত সাতজন। তাঁদের মধ্যে চারজন এখনো নির্বাচনের পথেই হাঁটছেন। বাকি তিনজনের মধ্যে একজন আগেই আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন, একজন পদত্যাগ করেছেন, আরেকজন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রেজাউল হাসান কয়েস লোদী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। গতকাল রবিবার বিএনপিপন্থী যে দুইজন সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে একজন সাবেক কাউন্সিলর, আরেকজন এবারই প্রথম মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন।

হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর মাজার এলাকা ও এর আশপাশ নিয়ে সিসিকের ১ নম্বর ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী পাঁচ-ছয় দিন আগে মনোনয়ন ফরম কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘দলের চাপ আছে। কিন্তু এলাকার মানুষ কিছুতেই মানছে না। তাদের চাপে মনোনয়ন ফরম কিনেছি।’

সিসিকের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীমও জানিয়েছেন, নির্বাচন না করে উপায় নেই তাঁর। তিনি বলেন, ‘এলাকার মানুষ আমাকে চারবার নির্বাচিত করেছেন। এখন হুট করে সরে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। এলাকার মানুষ বলছে, ‘আমি তো কোনো দলের মার্কা নিয়ে ভোট চাইনি। তাঁরাও মার্কা দেখে ভোট দেননি। এখন তাঁদের আমি কী বলি?’

১৪ নম্বর ওয়ার্ডের দুইবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম এখনো নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে অটল। তিনি মনোনয়ন ফরমও সংগ্রহ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রমজান মাসে ওয়ার্ডের তরুণ, মুরব্বি ও মা-বোনদের সঙ্গে আলাদাভাবে মতবিনিময় করেছি। সবাই নির্বাচন করতে বলছেন।’

১৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল বলেন, ‘নমিনেশন ফরম কেনার পর রবিবার সেটা জমাও দিয়েছি। তিনবার নির্বাচন করেছি। এলাকার জনগণ আমাকে কখনো খালি হাতে ফেরাননি। তাঁদের দাবির কারণে আমার পিছিয়ে আসার সুযোগ নেই।’

২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আব্দুল রকিম তুহিনও মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। দুইবারের নির্বাচিত এই কাউন্সিলর বলেন, ‘আমি যেহেতু আগেই দল থেকে পদত্যাগ করেছি। আমার ক্ষেত্রে দলীয় বাধা আর নেই।’