লাতু ডেস্ক:: আসন্ন সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে প্রার্থী দিচ্ছে না বিএনপি। বিএনপি নির্বাচনে না এলেও ভোটে লড়বেন সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। দল ছেড়ে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী থাকছেন তিনি। এমন তথ্য জানিয়েছেন মেয়র আরিফ অনুসারী বিএনপি নেতারা।
তাঁরা বলছেন, ইতোমধ্যে আরিফুল হক চৌধুরী দলীয় হাইকমাণ্ডের সম্মতি আদায় করেছেন।এ কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে তাঁর কোনো বাধা নেই। দলের সমর্থনের প্রয়োজন নেই।দল থেকে পদত্যাগ করেই তিনি নির্বাচন করবেন।যদিও এ নিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীর বক্তব্য মেলেনি। তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন।আজ সোমবার তাঁর দেশে ফেরার কথা।
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সব কেন্দ্র মিলিয়ে আরিফুল হক চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯২ হাজার ৫৯৩ ভোট। আর বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৮৬ হাজার ৩৯৭। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের চেয়ে ৬ হাজার ১৯৬ ভোট বেশি পেয়েছিলেন আরিফুল হক চৌধুরী।
সিলেট পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা করা হয় ২০০২ সালে। প্রথম নির্বাচন হয় চারদলীয় জোট সরকার আমলে। এতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী হিসেবে বিজয়ী হয়েছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। তিনি পৌরসভা থাকাকালে চেয়ারম্যান থেকে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। পরে ২০০৮ সালে কারাগারে থাকা অবস্থায় দ্বিতীয়বার বিজয়ী হন কামরান। তৃতীয় নির্বাচন হয় ২০১৩ সালের ১৫ জুন। এ নির্বাচনে কামরানের সঙ্গে মেয়র পদে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী। এতে আরিফুল হক পেয়েছিলেন ১ লাখ ৭ হাজার ৩৩০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বদরউদ্দিন আহমদ কামরান পেয়েছিলেন ৭২ হাজার ২৩০ ভোট।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মনোনয়ন পেতে সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সঙ্গে দলীয় ফোরামে তীব্র লড়াই করেছিলেন আসাদ উদ্দিন আহমদ ও অধ্যাপক জাকির হোসেন। এরপর দলের মনোনয়ন পান কামরানই। ঘটনাবহুল ওই নির্বাচনে কামরান হেরে যান। এতে দলীয় সর্তকবার্তাও পেয়েছিলেন সিলেটের নেতারা।
মেয়র পদে নির্বাচনের আশায় গত পাঁচ বছর ধরে মাঠে রয়েছেন আওয়ামী লীগের ডজন খানেক নেতা। তাঁরা নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।নৌকা পেতে কেন্দ্রে লবিং তদবিরও রক্ষা করে চলেছেন।
বিশেষ করে কামরানের মৃত্যুর পর থেকে মেয়র পদে আরিফুল হক চৌধুরীকে ভোটের মাঠে চ্যালেঞ্জ করার মতো প্রার্থীর অভাব দেখা দেয়। তবে আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়ে মাঠে নামেন আসাদ উদ্দিন, অধ্যাপক জাকির হোসেন, সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সিটি কাউন্সিলর আজাদুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক এটিএম হাসান জেবুল ও সাংগঠনিক সম্পাদক কামরানপুত্র ডা. আরমান আহমদ শিপলু। সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক ও প্রিন্স সদরুজ্জামান।
সম্প্রতি লন্ডন থেকে এসে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী মেয়র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় মাঠ গরম হয়ে ওঠে। আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে নিজের অবস্থান জানান দিতে তিনি রাতদিন গণসংযোগ করে যাচ্ছেন।
অন্যদিকে, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলনের নেতারাও সমানতালে প্রচারণা চালালেও নীরব কেবল বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।