সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

চিরনিদ্রায় শায়িত নাঈম, শঙ্কামুক্ত মিজানুর



বিজ্ঞাপন

এ.জে লাভলু:: দুদিন আগেও দুই বন্ধু একসাথে খেয়েছেন। একসাথে ঘুরেছেন। অথচ আজ দুজন ভিন্ন দুটি স্থানে। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়ে কাতার প্রবাসী নাঈম আহমদ (২৪) চিরদিনের জন্য শায়িত হয়েছেন কবরে।

সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় জানাজা শেষে নিহত নাঈমকে দাফন করা হয়েছে। আর আহত মিজানুর রহমান (২৫) শঙ্কামুক্ত হলেও এখনো হাসপাতালের বিছানায় রয়েছেন।

এর আগে গতকাল রোববার (১২ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষে নাঈম আহমদ (২৪) ও মিজানুর রহমান (২৫) গুরুতর আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের সিলেট আল-হারামাইন হাসপাতালে ভর্তি করা হলে নাঈমের মৃত্যু হয়।

দুর্ঘটনার পর অটোরিকশার চালক পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ দুর্ঘটনা কবলিত অটোরিকশাটি জব্দ করেছে।

নিহত নাঈম উপজেলার দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির শিমুলয়া গ্রামের মৃত হোছন আহমদের ছেলে এবং আহত মিজানুর একই গ্রামের মৃত শহীদুর রহমানের ছেলে।

এদিকে নাঈমের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমেছে। তার মতো এমন প্রাণবন্ত ও শান্ত প্রকৃতির ছেলের মৃত্যু ব্যথিত করেছে পরিবার-স্বজন ও বন্ধুদের। তারা কেউই নাঈমের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না।

নাঈমের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তাকে হারিয়ে তার মা প্রায় দিশেহারা। আত্মীয়-স্বজনরা কাঁদছেন। তাকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করছেন। শেষবারের মতো তাকে দেখতে বাড়িতে প্রতিবেশী ও বন্ধুরা ভীড় করছেন। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নাঈম খুব শান্তপ্রকৃতির ছেলে ছিল। সবসময় হাসিখুশি থাকত। তার এমন মৃত্যু তারা মানতে পারছেন না।

আহত মিজানুর রহমানের চাচাতো ভাই জাবেদ আহমদ বলেন, মিজানুর মাথায় ও বাম হাতে আঘাত পেয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সে এখন শঙ্কামুক্ত। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

এদিকে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানিয়েছেন বড়লেখা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইয়ারদৌস হাসান। তিনি বলেন, এখনও হতাহতের পরিবারের থেকে কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুর্ঘটনা কবলিত অটোরিকশা জব্দ করেছে। তবে চালককে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় ও হতাহতদের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, নাঈম ও মিজানুর দীর্ঘদিন ধরে কাতারে ছিলেন। নাঈম সেখানে একটি কাপড়ের দোকানের কাজ করেন এবং মিজানুর একটি কোম্পানীতে কাজ করতেন। সম্প্রতি তারা দুজন ছুটিতে দেশে এসেছিলেন। রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় নাঈম ও মিজানুর কাঠালতলী বাজার থেকে মোটরসাইকেলযোগে বড়লেখা সদরের দিকে যাচ্ছিলেন। বড়লেখা-মৌলভীবাজার আঞ্চলিক মহাসড়কের কাঠালতলী বাজারের সোনার বাংলা ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছামাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে তাদের মোটরসাইকেলের মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে নাঈম ও মিজানুর মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে গুরতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন দ্রুত তাদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের দুজনকে উন্নত চিকিৎসার সিলেটে ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। স্বজনরা তাদের সিলেট আল-হারামাইন হাসপাতালে নিলে রাত নয়টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক নাঈমকে মৃত ঘোষণা করেন। আর গুরুতর আহত মিজানুরকে একই হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।