রবিবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখায় প্রাক্তন স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে নিজেই ফেঁসে গেলেন বাদী



বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: হয়রানির উদ্দেশ্যে মিথ্যা অভিযোগ তুলে প্রাক্তন স্ত্রী ও তার পিতৃ-পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছিলেন এক ব্যক্তি। বিষয়টি আদালতে ধরা পড়ায় এখন মামলার বাদী নিজেই ফেঁসে গেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের বড়লেখায়। বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ জিয়াউল হক মামলার বাদীর বিরুদ্ধে মামলা ((সি.আর-৫৬৫/২৪) করেছেন। বৃহস্পতিবার আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেছেন।

ওই ব্যক্তির নাম লাল মিয়া। তিনি উপজেলার দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়য়নের মুহাম্মদনগর গ্রামের মৃত মজবিল আলীর ছেলে। লাল মিয়া পেশায় তেজপাতা ব্যবসায়ী।

সূত্র জানায়, গত ৪ এপ্রিল তেজপাতা ব্যবাসয়ি লাল মিয়া তার সাবেক স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও তার পরিবারের লোকজন তাকে প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে মারপিট ও হত্যার হুমকি প্রদানের অভিযোগ এনে ১৮৬০ সালের দন্ডবিধি আইনের ৩২৩/৩৪২/৩৭৯/৪২২/৫০৬(২) ধারায় অভিযোগ এনে লাল মিয়া সাবেক স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সি.আর-১৭৯/২৪) মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য থানার ওসিকে নির্দেশ দেন। এসআই আতাউর মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পান। তিনি ঘটনা তদন্তে গিয়ে জানতে পারেন মামলার বাদী লাল মিয়া বিবাদী মনোয়ারা বেগমের বাড়ির পাশে নির্জন টিলার উপরে দা হাতে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে বিবাদী মনোয়ারা বেগমের আত্মীয় স্বজন ও এলাকার লোকজন তাকে আটক করেন। পরে লাল মিয়ার পরিবারের লোকজনসহ স্থানীয় ইউপি সদস্যকে আটকের বিষয়টি অবহিত করেন। বোবারথল ইসলামনগর গ্রামটি দূর্গম টিলা অঞ্চল হওয়ায় তাৎক্ষণিক বিষয়টি সমাধান করা সম্ভব না হওয়ায় পরের দিন ৫ এপ্রিল সকালে লাল মিয়ার বসত বাড়ি এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য ওই মামলার আরজিতে উল্লেখিত সাক্ষী আব্দুল মান্নান সেখানে উপস্থিত হয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য লোকজনের সালিসে মামলার বাদী লাল মিয়া তার সাবেক স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের বাড়িতে বিনা অনুমতিতে কোনো দিন যাবে না বলে মৌখিক অঙ্গীকার করে। বিষয়টি আপোষে নিষ্পত্তি করে লাল মিয়াকে সুস্থ অবস্থায় আব্দুল মান্নান মেম্বার নিজ জিম্মায় নিয়ে যান। কিন্তু পরবর্তীতে সাবেক স্ত্রী ও তার পরিবারের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে শায়েস্তা করার হীন উদ্দেশ্যে লাল মিয়া সাবেক স্ত্রী মনোয়ারা বেগম ও তার পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে কাল্পনিক ঘটনা সাজিয়ে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

আদালত সূত্র জানায়, ফরিয়াদী লাল মিয়া সি.আর ১৭৯/২৪ নং মামলা ১৫ এপ্রিল দায়ের করার পরবর্তী ৭ আগস্ট, ২৬ সেপ্টেম্বর ও ১০ অক্টোবরের ধার্য্য তারিখে আর আদালতে উপস্থিত হননি। এভাবে ফরিয়াদী লাল মিয়ার এরূপ কার্যকলাপ এবং তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট ১৬১ ধারায় জবানবন্দি প্রদানকারী সাক্ষীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে নালিশী দরখাস্থের মাধ্যমে দায়েরী এ মামলা হয়রানীমূলক মর্মে আদালতের প্রতীয়মান হলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক বৃহস্পতিবার নিজে বাদি হয়ে লাল মিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের ও আদালতের মূল্যবান কর্মঘন্টা নষ্ট করার অপরাধে ১৮৬০ সালের দন্ডবিধি আইনের ১৮২, ২০৯ ও ২১১ ধারায় মামলা দায়ের করেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারি নেপুর চন্দ্র দাস মিথ্যা মামলা দায়ের ও আদালতের মূল্যবান কর্মঘন্টা নষ্ট করার অপরাধে সি.আর ১৭৯/২৪ নং মামলার বাদির বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিজ্ঞ আদালত আসামি লাল মিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।