জরুরি প্রয়োজনে শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশিদের জন্য এক মাসের অন-এরাইভাল ভিসা দেবে চীন। তবে শুধু ‘ভ্রমণ’-এর জন্য যাওয়া বাংলাদেশিরা চীনের বিমানবন্দরে এ সুবিধা পাবেন না। ভ্রমণ ভিসার শর্তাবলী পূরণ করে ঢাকা থেকেই তাদের আগাম ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, চীনের নাগরিকরা বাংলাদেশে অন-এরাইভাল ভিসা পান। এটি বহু দিন থেকে চলে আসছে। গত মাসে চীনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করেছেন। তারা নিজে থেকেই বাংলাদেশিদের জন্য এ সুবিধা চালুর কথা বলে গেছেন। ঢাকার কর্মকর্তারা বলছেন, ভিসা সহজীকরণে বেইজিংয়ের স্বদিচ্ছাকে স্বাগত জানিয়েছে ঢাকা।
এখন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্র্তারা কাজ করছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলে আশা করছে ঢাকা। কর্মকর্তারা জানান, চীন অনেক দেশকে ভিসামুক্ত কিংবা অন-এরাইভাল ভিসা সুবিধা দিয়ে থাকে। এর অংশ হিসেবে নির্দিষ্ট কিছু বিমানবন্দর বা ইমিগ্রেশন পেয়েন্টে বাংলাদেশিরা নির্ধারিত ফরম পূরণের মাধ্যমে পোর্ট এন্ট্রি ভিসা পাবেন। তবে এক্ষেত্রে বেশ কিছু আনুষ্ঠানিকতা তাদের ঢাকাতে সম্পন্ন করতে হবে। ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের একজন কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যম জানায়- মানবিক কারণ, ব্যবসা, কোনো যন্ত্রাংশ মেরামতের মতো প্রয়োজনীয় বা জরুরি কাজে যাওয়া বাংলাদেশিদের জন্য অন-এরাইভাল ভিসা সুবিধা দেবে চীন। তবে সেখানে শর্ত রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য বা যন্ত্রাংশ মেরামতের কাজ কিংবা অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনের বেলায় চীনা প্রতিষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র থাকতে হবে। কোনো বাংলাদেশি কেবল ভ্রমণের উদ্দেশ্যে চীন যেতে চাইলে অবশ্যই আগাম ট্রাভেল ভিসা নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে চীনা ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে হবে।
‘চীনের পোর্ট-ভিসা ব্যবস্থা প্রসঙ্গে বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের ব্যাখ্যা’ শিরোনামে প্রচারিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দূতাবাসের রাজনৈতিক কাউন্সিলর চেন ওয়েই বলেন, “বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সুবিধার্থে ‘পোর্ট-ভিসা ব্যবস্থা’ তথা ‘অ্যারাইভাল ভিসা’ চালু করেছে চীন সরকার। ‘গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের বহিরাগমন ও প্রবেশ প্রশাসন আইন’ অনুযায়ী, এই ব্যবস্থা কোনো নির্দিষ্ট রাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য করা হয়নি। তিনি আরো বলেন, মানবিক কারণে চীনে জরুরি প্রবেশ, আমন্ত্রণক্রমে জরুরি বাণিজ্যিক কাজে যাওয়া, প্রকল্পের মেরামত বা অন্য জরুরি কাজে চীনে যাওয়া এবং পর্যটন এজেন্সির মাধ্যমে চীন ভ্রমণে আগ্রহী বিদেশিদের সুবিধার্থে ওই ‘পোর্ট-ভিসা ব্যবস্থা’ চালু করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা অনুসারে বিদেশিরা শর্তসাপেক্ষে চীনের বিমানবন্দরে এসে পোর্ট ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন। এই ভিসার মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ ৩০ দিন। বাংলাদেশিরাও প্রয়োজনীয় শর্ত পূরণ করে এবং সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র দাখিল করে, চীনের বিমানবন্দরে এই ভিসার জন্য আবেদন করতে পারবেন।”
বাংলাদেশিরা ইন্দোনেশিয়া, ভুটান, ফিজি, হাইতি, জ্যামাইকা, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, বারবাডোজ, ডমিনিকা, বাহামা, গ্রানাডা, সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিস সেন্ট, ভিনসেন্ট অ্যান্ড দ্য গ্রেনাডিনস, গাম্বিয়া, লেসোথো, মাইক্রোনেশিয়া ও ভানুয়াতুতে ভিসামুক্ত ভ্রমণের সুযোগ পেয়ে থাকেন। তাছাড়া, বাংলাদেশিরা মালদ্বীপ, নেপাল, কম্বোডিয়া পূর্ব তিমুর, বলিভিয়া, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, সোমালিয়া, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, মাদাগাস্কার, বেনিন, গিনিবিসাউ, কমোরোস, টোগো, সামোয়া ও টুভালুতে অন-এরাইভাল ভিসা পেয়ে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে উপযুক্ত প্রমাণাদি প্রদর্শনসাপেক্ষে বাংলাদেশিদের জন্য মালয়েশিয়া, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ অনেক দেশই ই-ভিসা দিচ্ছে