শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

জুড়ীতে বানরের প্রতিশোধ!
বিশেষ প্রতিবেদক

বিশেষ প্রতিবেদক



বিজ্ঞাপন

খাদ্য আর আবাস সংকটের কারণে মৌলভীবাজারে জুড়ীতে বনাঞ্চল ছেড়ে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে শত শত বানর। যখন তখন লোকালয়ে প্রবেশ করে নষ্ট করছে ফসল, রান্না ঘরে ঢুকে খাচ্ছে খাবার, আবার কখনো নিয়ে যাচ্ছে।

জুড়ী উপজেলার বিভিন্ন বনাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বন্যপ্রাণীরা খাদ্য আর আবাস সংকটে পড়েছে। সেই বন্যপ্রাণীদের অন্যতম বড় একটি দল হচ্ছে বানর। খাদ্য সংকটের কারণেই তারা লোকালয়ে আসছে বলে মনে করছেন এলাকাবাসী।

monkey

স্থানীয় সূত্রে জানা যায় , জুড়ীতে লোকালয়ের আশেপাশের পাহাড়ে বসবাসকারী বানরগুলোর বাসস্থান উজাড় করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। এক সময় যে বানরগুলো বনাঞ্চলে থাকত তারা এখন লোকালয়ে ফিরে অতিষ্ঠ করছে মানুষের জীবন। প্রতিদিন দলে দলে এসে তারা হানা দিচ্ছে বিভিন্ন গ্রামে। উপজেলার গোয়ালবাড়ি, পূর্বজুড়ী, পশ্চিমজুড়ী, সাগরনাল ও জায়ফরনর এই পাঁচটি ইউনিয়নের প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষের যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বন্য বানরগুলো। বাড়িঘরে ঢুকে চিৎকার চেঁচামেচি আর সুযোগ পেলেই ঘরের খাবার নিয়ে পালাচ্ছে বানরের দল।

এদের অত্যাচারে আতঙ্কিত স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা। ভয়ে দিনে-দুপুরে দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখছেন অনেকেই। বানরের দল হানা দিয়ে নষ্ঠ করছে ক্ষেতের ধান, ফসলাদি এবং বিভিন্ন শাক সবজির মাঠ। এতে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এলাকাবাসীর ক্ষতির পাশাপাশি বন্যপ্রাণীগুলোও পড়বে আশঙ্কার মধ্যে।

monkey

পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের ফাতেমা বেগম জানান, কোনো সবজি বানরের যন্ত্রণায় ক্ষেতে রাখা যাচ্ছে না। তারা ঘরে ঢুকে রান্না করা ভাতও খেয়ে ফেলছে, অনেক সময় তরকারির কড়াই নিয়ে চলে যাচ্ছে। ঘরে ঢুকে সব কিছু তছনছ করে দিচ্ছে। কিন্তু বনবিভাগ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

স্থানীয় গ্রাম পুলিশের সদস্য অশোক কুমার দাশ জানান, স্কুলের শিক্ষার্থীরা ভয়ে স্কুলে যেতে চায় না। কারণ তাদেরকে রাস্তায় পেলেই বানরের দল ঘিরে ধরে।

monkey

বন্যপ্রাণী সংরক্ষক তানিয়া খান জানান, বানররা প্রতিশোধ নিচ্ছে। বন্যপ্রাণীদের বাসস্থান মানুষ ধ্বংস করেছে ফলে প্রাণীরা বাধ্য হয়ে লোকালয়ে আসছে। বন ধ্বংস করে এ পরিস্থিতি মানুষই তৈরি করেছে। বনায়ন করে বানরের বাসস্থান এবং খাদ্য নিশ্চিত করতে পারলে তারা অবশ্যই বনে চলে যাবে ।

এ ব্যাপারে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) আবু মুসা শামসুল মুহিত চৌধুরী জানান, বনাঞ্চল উজার হওয়ায় খাদ্য সংকটের কারণে বানরগুলো জনবসতিপূর্ণ এলাকায় চলে আসছে। মানুষ ও ধীরে ধীরে বনাঞ্চলে বসতবাড়ি নির্মাণ শুরু করেছে যার প্রভাবে আবাস ও খাদ্য সংকটে পড়ছে বন্যপ্রাণীরা। তবে বনাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের ফলজ গাছ লাগানো হচ্ছে। আগামীতে সেটা বৃদ্ধি করা হবে তখন এ সমস্যা থাকবে না।