রাত থেকে থেকে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি, তার উপর পরিবহন ধর্মঘট। দুয়ে মিলে সিলেটে যাত্রীদের নাভিশ্বাস উঠছে। সাথে পরিবহন শ্রমিকদের আগ্রাসী পিকেটিংয়ের কারণে চলছে না ব্যক্তিগত গাড়িও। সব মিলিয়ে সিলেটের সাধারণ মানুষ পরিবহন ধর্মঘটে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
কাছাকাছি দূরত্বের যাত্রীরা পায়ের উপর ভরসা করে গন্তব্যে রওয়ানা দিলেও বিপাকে পড়েছেন দূরপাল্লার যাত্রীরা।
সিলেটে রোববার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টা কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ৮ দফা দাবিতে তাদের এ কর্মবিরতির ফলে সিলেটে সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সকালে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি।
সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন কোষাধ্যক্ষ সামছুল হক মানিক মিয়া বলেন, ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যেই তাদের এ কর্মবিরতি। সকাল ৬টা থেকে কর্মবিরতি পালন করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার পর্যন্ত এই কর্মবিরতি চলবে। কর্মবিরতির ফলে সিলেটের সকল রুটেই বাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
পরিবহন ধর্মঘটের কারণে সিলেটের রাস্তায় মানুষের দুর্ভোগের শেষ নেই। বাস বন্ধ থাকার পাশাপাশি অটোরিকশা চলাচলও বন্ধ রয়েছে। আর এ কারণে মানুষের দুর্ভোগের মাত্রা আরোও বেড়েছে। এদিকে রিকশা ও ব্যক্তিগত যানবাহন নিয়ে মানুষকে তার প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হচ্ছে।
সিলেট নগরীর হাওয়াপাড়ার বাসিন্দা মালিক আহমদ বলেন, জরুরী কাজে সকালে ঢাকা যাওয়ার কথা ছিলো। টার্মিনালে গিয়ে দেখি সব গাড়ি বন্ধ। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বিপাকে পড়েছি। গুড়িগুড়ি বৃষ্টিতে রিকশা চালকরাও বেশি ভাড়া নিচ্ছেন।
সরকারি স্কুলের শিক্ষিকা তারানা ইসলাম বলেন, ধর্মঘটের কারণে গোলাপগঞ্জ যেতে পারিনি। বাসা থেকে স্কুলের দূরত্ব ২৯ কিলোমিটার। এ দূরত্বে রিকশা নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। সব সময় অটোরিকশায় কিংবা বাসে করে যাতায়াত করি। ধর্মঘটের কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় যেতে পারিনি।
জানা যায়, সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর কয়েকটি ধারাকে শ্রমিকদের ‘স্বার্থবিরোধী’ উল্লেখ করে আন্দোলন করছে বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
তাদের দাবি, শ্রমিকদের ‘স্বার্থবিরোধী’ ধারাগুলো বাতিল করতে হবে। গত শনিবার সিলেট কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে সমাবেশ করে ২৭ অক্টোবরের মধ্যে ৮ দফা দাবি মানতে সরকারের প্রতি আলটিমেটাম দেয় পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন, সিলেট বিভাগীয় কমিটির সভাপতি সেলিম আহমদ বলেন, ‘আমরা আলটিমেটাম দিয়েছিলাম। স্মারকলিপিও দিয়েছি। কিন্তু সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তাই ৪৮ ঘন্টা সারাদেশে পরিবহন শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করছেন।