‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতমে নিজ শরীর রক্তাক্ত করে মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার শিয়া সম্প্রদায়ের মুসলমানরা পালন করলো পবিত্র আশুরা। ১০ মহরম ( ২১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার) দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় ধর্মীয় ভাবগাম্বীর্য ও নানা আনুষ্ঠানিকতায় মধ্য দিয়ে কুলাউড়া পৃথিমপাশা ইউনিয়নের নবাব বাড়িতে পবিত্র আশুরা পালন করা হয়।
বিকেল সাড়ে ৩টায় পৃথিমপাশা নাবাব বাড়ির হোসেনি দালান থেকে বের হয় সু-সজ্জিত তাজিয়া মিছিল। শিয়া সম্প্রদায়ের কয়েক’শ পুরুষ যুদ্ধের নানা অনুসঙ্গ, তাজিয়া, কালো, লাল ও সবুজ নিশান উড়িয়ে মিছিলে অংশ নেয়। মিছিলে অশংগ্রহণ কারীরা শোকের প্রতীক কালো পোষাক পরিধান করে।
দীর্ঘ আড়াইশ বছরেরও বেশী সময় ধরে এই নবাব বাড়িতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। দিবসটি পালনে হাতির বহর নবাব বাড়ির ঐতিহ্য হলেও এবার প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞায় তা সম্ভব হয়নি।
‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে শিয়া সম্প্রদায়ের অনুসারীরা নিজের শরীর রক্তাত্ব করে মিছিল নিয়ে উপজেলার রবিরবাজার পদ্মাদিঘির পারে সমবেত হয়। সেই মিছিলের সাথে যোগ দেয় তরফি সাহেব বাড়ির আলম মিছিল। উভয় মিছিল একত্রি হয়ে মাতমের সাথে কারবালার শোক পালন করেন তাঁরা।
কালো জামা রক্তে ভিজে চুপসে গেছে আর সাদা জামা হয়ে উঠে রক্তে রঞ্জিত। তবুও ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হচ্ছে আকাশ-বাতাস। তাজিয়া মিছিলে বুক চাপড়ে, জিঞ্জির দিয়ে শরীরে আঘাত করে প্রকাশ করা হয় মাতম। কেউ আবার ধারালো ছোরাগুচ্ছ দিয়ে নিজ মাথা রক্তত্ব করতে দেখা যায়।
দিবস উদযাপন কমিটির মোতাওয়াল্লী মৌলভীবাজর-২ আসনের সাবেক এমপি এডভোকেট নওয়াব আলী আব্বাছ খানকে ধারালো ছোরাগুচ্ছ দিয়ে নিজ মাথা রক্তত্ব করতে দেখা যায়। তিনি বলেন, আজকের এই দিনটির জন্য সারাবছর অপেক্ষায় থাকি। শরীরে রক্ত করণ ঘটিয়ে উপলব্ধি করতে চাই কেমন ছিলো হোসাইনের যন্ত্রনা। এই দিবসটি আমাদের বাড়ির ঐতিহ্য।