মৌলভীবাজারের বড়লেখায় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ১১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে পুলিশ। গত ১ সেপ্টেম্বর শনিবার বড়লেখা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে থানায় পুলিশ অ্যাসল্ট মামলা করেছেন। মামলা নম্বর-০৪। মামলায় অজ্ঞাতনামা ৪০/৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে ।
মামলার আসামিরা হচ্ছেন- উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস স্বপন, পৌর বিএনপির যুব বিষয়ক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম খোকন, উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির পলাশ, পৌর বিএনপির প্রচার সম্পাদক কামরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সদস্য ইকবাল হোসেন, বর্ণি ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক লোকমান হোসেন বায়েস, পৌর বিএনপির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. সফিকুজ্জামান, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা রায়হান মো. মুজিব ও আব্দুল মালিক, উপজেলা ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম মতিন ও পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক শিপার আহমদ।
এদিকে ৫ সেপ্টেম্বর বুধবার উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল হাফিজ, সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান খছরু ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মো. আব্দুস সহিদ খান গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ করে বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা। এই দিন বড়লেখায় কোনো সহিংস ঘটনা ঘটেনি।
সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মো. আব্দুস সহিদ খান স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পৌর শহরে র্যালী ও আলোচনা সভা করে বিএনপি। কিন্তু সম্পূর্ণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে পুলিশ বিএনপি নেতাদের উপর এ মামলা করেছে। তাই নেতৃবৃন্দ দায়েরকৃত এ মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
অনুরূপ বিবৃতি দিয়েছেন পৌর বিএনপির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান রাহেনা বেগম হাসনা ও সাংগঠনিক সম্পাদক মুক্তাদির হোসেন মিছবাহ।
পুলিশের মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, গত ১ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে দক্ষিণবাজার এলাকায় খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বড়লেখা-জুড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এতে দুপাশের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যানযটের সৃষ্টি হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অবরোধ সরানোর কথা বললে বিএনপির নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ দায়িত্বরত পুলিশের উপর আক্রমণ করে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে কয়েকজন পুলিশ আহত হওয়ারও অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে স্থানীয়ভাবে অনেকেই জানিয়েছেন, গত ১ সেপ্টেম্বর শনিবার বড়লেখা পৌর শহরে সড়ক অবরোধ ও পুলিশের উপর হামলার মতো কোনো ঘটনা তাঁদের চোখে পড়েনি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক মো. আব্দুস সহিদ খান বলেন, ‘দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আমরা র্যালী ও আলোচনা সভা করেছি। সড়ক অবরোধ, পুলিশের সাথে সংঘর্ষ এরকম কিছুই হয়নি। এরকম একটি মিথ্যা মামলার জন্য গভীর বিষ্ময়, ক্ষোভ ও নিন্দা জানাচ্ছি। ঘটনাই ঘটেনি। কিন্তু হয়রানি করার জন্যই এ মামলাটি করা হয়েছে।’
এ ব্যাপারে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘ঘটনা ঘটেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলায় আহত পুলিশ সদস্যরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।’