একটি ফাঁকা জমির আগাছা সাফ করতে গিয়ে প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো ১৪টি নবজাতকের লাশ পাওয়া গেছে।
রোববার ভারতের কলকাতার হরিদেবপুরে একদল শ্রমিক ওই পরিত্যক্ত জমির আগাছা পরিষ্কার করতে গেলে ওইসব মৃতদেহের সন্ধান পায়।
আনন্দবাজার জানায়, রাজা রামমোহন সরণিতে কয়েক বিঘার একটি ফাঁকা জমি পরিষ্কার করার কাজ চলছিল। সেই সময়ে শ্রমিকরা প্রথমে একটি প্লাস্টিকের ব্যাগ পান। সেই ব্যাগ খুলতেই বেরিয়ে আসে একটি সদ্যোজাত শিশুর দেহ। এর পর তল্লাশি করতেই আরও বেশ কয়েকটি ব্যাগ পাওয়া যায়।
ব্যাগগুলো থেকে এখন পর্যন্ত ১৪টি এরকম মৃতদেহ পাওয়া গেছে। কয়েকটি মৃতদেহ কয়েক দিনের মধ্যে ফেলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার অনেকগুলো শিশুর কঙ্কাল বেরিয়ে পড়ায় মনে করা হচ্ছে সেগুলো অনেক দিন আগে ফেলা হয়েছে।
সেখানে এরকম আরও মৃতদেহ আছে কিনা তা খুঁজে দেখছে পুলিশ। কিভাবে ওই দেহগুলো সেখানে গেল তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছে খবর পেয়েই তিনি ছুটে যান। ১৪টি মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। কিভাবে মৃত সদ্যোজাত শিশুর দেহ ওই এলাকায় গেল তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই এলাকায় মদনমোহন জিউ ট্রাস্ট এবং স্থানীয় এক ব্যক্তির জমি মিলিয়ে দু’টি জমি একসঙ্গে হাত বদল হয়। তারপর থেকেই পুরো জমির এক দিকে উঁচু পাকা পাঁচিল এবং অন্যদিকে করোগেটেড টিন দিয়ে ঘেরা।
একটি অংশে চলছে নির্মাণকাজ। ওই জমির ভেতরেই থাকতেন মিস্ত্রিরা। রোববার সকালে তারা ওই টিনের পাঁচিলের গায়ে একটি ডুমুর গাছের গোড়ায় আগাছা সাফের কাজ করছিলেন।
এর পরই পুলিশে খবর দেন ওই শ্রমিকরা।
পুলিশ গিয়ে গোটা এলাকা তল্লাশি শুরু করে। প্রায় একই রকম ভাবে প্লাস্টিক ব্যাগের মধ্যে মেলে ১৪টি শিশুর মৃতদেহ। সেগুলোর অধিকাংশই পচে গলে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই ওই এলাকা বেড়া দিয়ে ঘেরা। ভেতরে পুকুর ভরাট করে নির্মাণ কাজ হচ্ছে বলেও তারা মনে করেছিলেন।
অসীম সরকার বলেন, ওই টিনের বেড়ার বিভিন্ন জায়গায় ফাঁকা রয়েছে। সেখান দিয়ে অনায়াসেই যে কেউ ঢুকে পড়তে পারে। তাদের সন্দেহ ওই ফাঁক দিয়েই কোনভাবে মৃত শিশু বাইরে থেকে এনে এখানে ফেলে দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ ওই এলাকায় তেমন কোনো সিসিটিভি খুঁজে পায়নি। তবে ঘটনাস্থলের প্রায় উল্টোদিকেই একটি চারতলা বাড়িতে ঢোকার পথে সিসিটিভি বসানো আছে। সেই সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে কোনো সূত্র মিলতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।