বুধবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখা থেকে আহতবস্থায় উদ্ধার করা লজ্জাবতী বানরটিকে বাঁচানো গেল না



বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা থেকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা একটি লজ্জাবতী বানর মারা গেছে। রোববার (৬ অক্টোবর) শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী রেসকিউ টিম সেন্টারে বানরটি মারা যায়।

আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) লজ্জাবতী বানরকে সংকটাপন্ন প্রাণী হিসেবে লাল তালিকাভুক্ত করেছে।

গত শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেল তিনটায় বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকরাকান্দি গ্রামের মৃত হাজী মনির উদ্দিনের বাড়ি থেকে মৌলভীবাজার এ্যানিমেল রেসকিউ টিম বানরটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছিল।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গোলাম রাব্বানি নামে এক যুবক লজ্জাবতী বানরটিকে আহত অবস্থায় দেখতে পান। পরে তিনি সেটিকে উদ্ধার করে তার নানা বাড়ি বড়লেখা উপজেলার সদর ইউনিয়নের সাতকরাকান্দি গ্রামের মৃত হাজী মনির উদ্দিনের বাড়িতে নিয়ে খাঁচায় রাখেন। তিনি বিষয়টি মৌলভীবাজার এ্যানিমেল রেসকিউ টিমকে জানান। খবর পেয়ে শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে মৌলভীবাজার এ্যানিমেল রেসকিউ টিম বানরটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়। পরে তারা বানরটিকে মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করেন। সেখান থেকে প্রাণিটিকে শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী রেসকিউ টিম সেন্টারে পাঠানো হয়। পরদিন রোববার (৬ অক্টোবর) সেখানে বানরটি মারা যায়।

মৌলভীবাজার এ্যানিমেল রেসকিউ টিমের পরিচালক আতিকুর রহমান মঙ্গলবার রাতে বলেন, এক যুবক বানরটিকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে তার নানাবাড়িতে নিয়ে রেখেছিলেন। পরে তিনি আমাদের কল দিয়ে জানালে আমরা সেটিকে উদ্ধার করি। বানরটির ডান হাত কাটা ছিল। ক্ষতস্থানে পোকায় ধরেছিল। আমরা প্রাণিটিকে উদ্ধার করে উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছি। আমরা আশা করেছিলাম হয়ত প্রাণিটি সুস্থ হয়ে ওঠবে। পরে মৌলভীবাজারের বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগে লজ্জাবতী বানরটিকে হস্তান্তর করি। পরদিন খবর নিয়ে জেনেছি যে এটি মারা গেছে। প্রাণিটিকে বাঁচানোর চেষ্টা করলাম। কিন্তু বাঁচানো গেল না।

তিনি বলেন, বড়লেখা উপজেলায় পাহাড়ি অঞ্চল রয়েছে। প্রায়ই বিভিন্ন বন্যপ্রাণী খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসে। প্রাণিটিও হয়তো খাবারের সন্ধানে লোকালয় এসেছিল। কেউ হয়ত বানরটিকে কিছু দিয়ে আঘাত করেছে। এজন্য তার ডান হাত কেটে গিয়েছিল।

বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের জুনিয়র ওয়াইল্ডলাইফ স্কাউট মো. শাহীন আলম বলেন, একটি লজ্জাবতী বানর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার এ্যানিমেল রেসকিউ টিম। তারা সেটিকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করেন। রাতে প্রাণিটিকে কলা খাইয়েছি। পরে চিকিৎসার জন্য প্রাণিটিকে শ্রীমঙ্গল বন্যপ্রাণী রেসকিউ টিম সেন্টারে পাঠানো হয়। কিন্তু সেখানে সেটি মারা গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে এটিকে মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে।

পরিবেশকর্মী সাঈব আহমদ ইয়াসের বলেন, অবাধে বনজঙ্গল ও গাছপালা কেটে উজাড় করা হচ্ছে। এর ফলে এসব লজ্জাবতী বানর আবাসস্থল হারাচ্ছে। খাদ্য সংকটে পড়ছে। খাদ্যের সন্ধানে বেরিয়ে লোকালয়ে এসে এসব প্রাণী স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে। এসব বন্যপ্রাণীকে রক্ষা করতে হলে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি স্থানীয়দেরও সচেতন হতে হবে।