বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

মৌলভীবাজারে দিনে থাকছে না গ্যাসের চাপ



বিজ্ঞাপন

লাতু ডেস্ক:: শীতের মৌসুম শুরুর পর থেকে মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকার বাসাবাড়িতে দুপুরবেলা প্রায়ই গ্যাসের চুলা জ্বালানো যাচ্ছে না। রান্নার জন্য কোনো কোনো দিন বেলা আড়াইটা-তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। গ্যাস সরবরাহ লাইনের শেষ প্রান্তে যাঁদের বাসাবাড়ি পড়েছে, সেই এলাকাতেই গ্যাসের চাপ কমে সমস্যা বেশি হচ্ছে।

শহরের দক্ষিণ কলিমাবাদ এলাকার নাজমা বেগম, মুসলিম কোয়ার্টার এলাকার মুজাহিদ আহমদ, বাহারমর্দান এলাকার জুলফিকার আলী ভুট্টোসহ বিভিন্ন গ্রাহক বলেন, শীত শুরুর পর থেকে দুপুর হলেই মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলির বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস থাকছে না। বেলা সাড়ে ১১টার দিক থেকে গ্যাসের চাপ কমতে শুরু করে। প্রথম দিকে চুলায় মিটিমিটি করে আগুন জ্বললেও একপর্যায়ে সম্পূর্ণ গ্যাস চলে যায়। এই অবস্থা থাকে বেলা দুইটা-আড়াইটা, কখনো তিনটা পর্যন্ত। এতে করে প্রায়ই দুপুরবেলায় পানি গরম করে গোসল ও রান্না করার আর সুযোগ থাকে না। গ্যাসের চুলার ওপর নির্ভরশীল পরিবারগুলোতে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তাঁদের ভোগান্তিতে পোহাতে হচ্ছে। শহর ও শহরতলির দক্ষিণ কলিমাবাদ, সৈয়ারপুর, বর্ষিজুড়া, চাঁদনীঘাট, গীর্জাপাড়াসহ সংযোগ লাইনের শেষ প্রান্তে যেসব বাসাবাড়ির অবস্থান, সেসব বাসাবাড়িতেই গ্যাসের চুলা না জ্বলার সমস্যাটি প্রকট। অনেক গ্রাহককে দুপুরের রান্না সকালের মধ্যেই করে ফেলতে হচ্ছে। যাঁদের পক্ষে সকালবেলা রান্না করা সম্ভব হয় না, তাঁদের প্রায়ই বেলা তিনটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

শহরের সৈয়ারপুর এলাকার শৈলেন রায় গত সোমবার বলেন, সৈয়ারপুর এলাকার লক্ষ্মীবালা স্কুল সড়ক, ফরেস্ট অফিস সড়কের অনেক বাসাবাড়িতেই দুপুরে চুলায় গ্যাস থাকে না। সোমবার দিনের বেলা ফরেস্ট অফিস সড়কের একটি বাসায় পারিবারিক অনুষ্ঠান ছিল। গ্যাস না থাকায় ওই গ্রাহক গ্যাসের সিলিন্ডার ভাড়া নিয়ে রান্নাবান্নার কাজ করেছেন।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড মৌলভীবাজার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, হবিগঞ্জের শাহজীবাজার থেকে শ্রীমঙ্গল হয়ে স্থাপিত সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে মৌলভীবাজার শহরে গ্যাস সরবরাহ করা হয়েছে। শাহজীবাজার থেকে মৌলভীবাজারের দূরত্ব প্রায় ৮০ কিলোমিটার। পাইপের ব্যাস ছয় ইঞ্চি। পাইপলাইন স্থাপনের সময় গ্রাহক অনেক কম ছিল।

গ্যাস সঞ্চালন লাইনের একেবারে শেষপ্রান্তে পড়েছে মৌলভীবাজার শহর। অন্যদিকে শীতকালে সঞ্চালন লাইনে গ্যাসের ঘনত্ব বেড়ে যায়। এতে গ্যাস সঞ্চালনে গতি কমে লাইনের শেষপ্রান্তে গ্যাসের চাপ কমে আসে। দুপুরবেলা হচ্ছে সর্বোচ্চ গ্যাস ব্যবহারের সময়। এ সময় কলকারখানা, বাসাবাড়িসহ সবখানেই গ্যাসের ব্যবহার বেড়ে যায়। তখন বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের চাপ কমে সরবরাহ ব্যাহত হয়। মানুষ বিপাকে পড়েন। মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলিতে প্রায় সাত হাজার গ্রাহক আছেন। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহকই বেশি।

জালালাবাদ গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৌলভীবাজারে গ্যাসের চাপজনিত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। সরবরাহ লাইনের দূরত্ব কমাতে কাছাকাছি দুটি দিক থেকে শহরে গ্যাস সরবরাহের চেষ্টা চলছে। এর একটি হচ্ছে শ্রীমঙ্গলের কালাপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে শ্রীমঙ্গল–মৌলভীবাজার গ্যাস সঞ্চালন লাইনে সংযোগ প্রদান। কালাপুর থেকে আসা এই লাইন থেকে শুধু মৌলভীবাজার শহর ও শহরতলিতেই গ্যাস সরবরাহ করা হবে। অপরটি হচ্ছে রাজনগর থেকে মৌলভীবাজারে পাইপ লাইন স্থাপনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ। এ দুটি সরবরাহ লাইন স্থাপন হলে চাপ কমে যাওয়ার এই সমস্যা থাকবে না।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম লিমিটেড মৌলভীবাজারের ব্যবস্থাপক মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, প্রধান লাইন থেকে ছোট লাইনের সংযোগ ও পুরোনো লাইনগুলোতে এই সমস্যা বেশি হচ্ছে। ভোগান্তি কমাতে পুরোনো লাইন বদলে ফেলা, দুপুরের আগে রান্না সেরে ফেলার পরামর্শ দিয়ে বলেন, নতুন সরবরাহ এই লাইন হয়ে গেলে চাপ কম থাকার সমস্যা থাকবে না।