সিলেটের গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর সীমান্ত দিয়ে নানা কৌশলে চোরাই পথে প্রবেশ করছে ভারতীয় নাছির উদ্দিন বিড়ি, টাটা গাড়ির পার্টস, টায়ার, মোটরসাইকেল, ভারতীয় বিড়ি, ইয়াবা (বাবা), ভারতীয় বিভিন্ন ব্রান্ডের মদ।
অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বিলুপ্ত প্রজাতির সুন্ধি কাছিম (কচ্ছপ) সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পণ্য৷
স্থানীয়দের অভিযোগ, দিন রাত সমানভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এসব ভারতীয় পণ্য। এতে খুব একটা বাধার মুখে পড়ছে না চোরাকারবারিরা।
মূলত ভারত ও বাংলাদেশ সীমান্তের বেশ কিছু এলাকায় বেড়া নেই। এই সুযোগ গ্রহণ করছে দুই দেশের চোরাচালানি চক্র। এর মধ্যে সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ি, বল্লাঘাট জিরো পয়েন্ট, তামাবিল চিচির মংলা, নলজুড়ি, উদ্ভিদ তথ্য সংঘ নিরোধ কেন্দ্র, আলুবাগান, শ্রীপুর, ঝিংগাবাড়ি, কেন্দ্রি হাওর, ডিবির হাওর, আসামপাড়া, ঘিলাতৈল, গোয়াবড়ি, পিটরাখলা, কালিঞ্জিবাড়ি, লালাখাল গ্রান্ড, তুইমইর, বাশতলা সীমান্ত রয়েছে।
এরমধ্যে ভারতের মুক্তাপুর বাংলাদেশের ডিবির হাওর সম্প্রতি চোরাকারবারিদের নিরাপদ রুটে রূপ নিয়েছে। কেবল মাদক, অস্ত্র নয় কখনো কখনো শুল্ক ফাঁকি দিয়ে মোটরসাইকেলের পার্টসসহ নিম্নমানের প্রসাধনী পণ্য নিয়ে আসছে চোরাকারবারি চক্র।
স্থানীয়রা জানায়, সীমান্তের বিভিন্ন হাটে ভারতীয় খাসিয়ারা প্রতিদিন টমেটো, বিভিন্ন সবজি নিয়ে এসে উপস্থিত হয়। বাস্তবে এসব সবজির বস্তায় ফেনসিডিল, ইয়াবাসহ নানা পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তারা। এছাড়া নাইজেরিয়ান নাগরিকরাও চোরাই পথে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা চালায়। জাফলং এলাকার ‘সংগ্রাম সীমান্ত ফাঁড়ি’ এলাকা দিয়ে দিন দুপুরে পিপীলিকার মতো সারি বেঁধে ভারত থেকে সবজি নিয়ে অবৈধ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করে চোরাকারবারিরা৷ এতে বাংলাদেশ সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷
ডিবির হাওর এলাকায় ছোট ছোট নৌকা দিয়ে ভারতীয় নাগরিকরা বাংলাদেশের হাট বাজারে প্রবেশ করে। বিজিবির টহলরত সদস্যদের ম্যানেজ করে সহজে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন পণ্য বাংলাদেশে বিক্রি করে। পাশাপাশি তারা বাংলাদেশ থেকে রফতানিযোগ্য পণ্য নিয়ে যায়।
বর্ডার গার্ড সংগ্রাম বিওপির কমান্ডার নায়েব সুবেদার জয়নাল বলেন, ‘চোরাচালান এখন আর নেই বললেই চলে। কিছু লোক তরিতরকারি নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করলে আমরা তাদের তাড়িয়ে দেই।’
তরিতরকারির ভেতরে মাদক থাকার বিষয়ে জয়নাল জানান, বর্ডার গার্ড সর্বদা সতর্ক রয়েছে। শনিবারও (৬ অক্টোবর) অভিযান চালিয়ে ১৫০ কেজি তামাক পাতা উদ্ধার করা হয়েছে। মাদকের ব্যাপারে বিজিবি জিরো টলারেন্সে রয়েছে।
বর্ডার গার্ড শ্রীপুর বিওপির কমান্ডার নায়েব সুবেদার জাহাঙ্গীর আলম জানান, ডিবির হাওরের পানি কিছুটা কমে গেছে। আগে অনেকেই ছোট নৌকা দিয়ে প্রবেশের চেষ্টা চালাত। তবে এখন তা বন্ধ রয়েছে। বর্ডার গার্ড সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।