নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় তিন ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পেয়ে মায়ের জানাজায় অংশ নিয়েছেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা আড়াইটার দিকে তিনি কারাগার থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে পুলিশি প্রহরায় মায়ের জানাজায় অংশ নেন। পরে জানাজা শেষে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। কাদির উপজেলার তালিমপুর গ্রামের মৃত আসাব উদ্দিনের ছেলে।
জানা গেছে, যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদিরের মা ছমিরুন নেছা শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বার্ধক্যজনিত কারণে তালিমপুর গ্রামের নিজবাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন। শেষবারের মতো মায়ের মুখ দেখতে ও জানাজায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিতে পরিবারের পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তি চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়। আবেদেনর পরিপ্রেক্ষিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বুলবুল আহমদে শনিবার বেলা আড়াইটা থেকে সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার জন্য তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেন। প্যারোলে মুক্তি পেয়ে কাদির পুলিশি প্রহরায় নিজের বাড়িতে যান। বাড়িতে প্রবেশের পর কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পরে বাদ আসর তালিমপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে মায়ের জানাজায় অংশ নেন তিনি। জানাজা শেষে তাকে পুলিশি প্রহরায় কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ৩০ নভেম্বর বড়লেখা পৌরশহরে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আবু হাসানের করা মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে কাদিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে গত ০৫ সেপ্টেম্বর রাতে যৌথবাহিনীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদিরকে আটক করে। পরে এক যুবদল নেতার করা মামলায় সন্ধিগ্ধ আসামি হিসাবে কাদিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনদিন কারাভোগের পর ০৮ সেপ্টেম্বর তিনি জেল থেকে মুক্তি পান।
যুবলীগ নেতা কাদিরের ছেলে মাহি হাসান নিলয় শনিবার বিকেলে বলেন, আমার বাবা দীর্ঘদিন ধরে একটি রাজনৈতিক মিথ্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। আমার দাদি শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। দাদিকে শেষবারের মতো দেখতে এবং জানাজায় অংশগ্রহণের জন্য প্যারোলে মুক্তি চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের মহোদয়ের কাছে আমি নিজে আবেদন করেছিলাম। পরে আদালতের নির্দেশে আমার বাবাকে তিনঘন্টার জন্য প্যারেলে মুক্তি দেওয়া হয়। জানাজা শেষে তাকে আবার কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে মৌলভীবাজার জেল সুপার মো. মজিবুর রহমান মজুমদারের মুঠোফোনে শনিবার বিকেলে একাধিকবার করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
বড়লেখা থানার ওসি মো. আবদুল কাইয়ূম শনিবার বিকেলে বলেন, যুবলীগ নেতা আব্দুল কাদির তার মায়ের জানাজায় অংশ নিতে আদালতের নির্দেশে কয়েক ঘণ্টার প্যারোলে মুক্তি পান। জানাজা শেষে পুলিশি প্রহরায় তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়েছে।