বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ



বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (টিটিসি)-এর প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার দাসের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে স্থানীয়রা তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এলাকাবাসী তদন্তের মাধ্যমে শিক্ষক রঞ্জিত কুমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিক্ষক রঞ্জিত কুমার বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছেন। বিভিন্ন সময় বিদ্যালয়ের উন্নয়নে প্রাপ্ত বরাদ্দ তিনি নয়ছয় করেছেন। ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষক রঞ্জিত কুমারের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে এলাকাবাসী ও অভিভাবকরা একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এনিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বড়লেখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার দাস ২০২০-২১ অর্থ বছরে রুটিন মেইনটেনেন্স বাবদ ৪০ হাজার টাকা ও প্রাক প্রাথমিক বাবদ ১০ হাজার মোট ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে পান আরো ৫০ হাজার। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১টি নতুন ভবন এবং জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রায় ১৪ লাখ টাকা ব্যায়ে ১টি নতুন ওয়াশ ব্লকও বুঝে পান। ২৩-২৪ অর্থ বছরে রুটিন মেইনটেনেন্স, প্রাক প্রাথমিক এবং ওয়াশ ব্লক বাবদ আরো ১ লাখ টাকা বরাদ্দ পান। রুটিন মেইনটেনেন্স বাবদ ৮০ হাজার এবং ওয়াশ ব্লকের ২০ হাজার টাকা যথাযথ ব্যবহার নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে স্কুল মাঠে মাটি ভরাট বাবদ (স্থানীয় এমপির বরাদ্দ থেকে) দুই ধাপে ১ লাখ ২ হাজার টাকা বরাদ্দ পান। বাস্তবে মাটি ভরাটের কোনো কাজই হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন। এছাড়া বিদ্যালয়ের টিনের চালা বিশিষ্ট পুরাতন স্কুল ঘর নিলামের পর প্রায় ৭টি কক্ষের ডেস্ক, বেঞ্চ, চেয়ার-টেবিলসহ ১২টি ফ্যান তিনি সরিয়ে নেন। যার কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এছাড়া স্কুলের সামনের সড়ক প্রশ্বস্ত করতে সীমানা প্রাচির ভেঙে ফেলেছে পৌর কর্তৃপক্ষ। ভাঙা দেয়ালের মালামালগুলো (ইটের কংক্রিট, পুরাতন রড, লোহার তৈরী গেইট) সরকারি নীতিমালার তোয়াক্কা না করেই গোপনে বিক্রি করে করেছেন। প্রতিষ্ঠানের বড় বড় কয়েকটি গাছ পৌর মেয়রের সাথে আঁতাত করে তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন।

এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা জানান, স্কুল মাঠে মাটি ভরাট প্রকল্পে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এই প্রকল্পের গঠিত কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার দাস নিজে হওয়ায় এতে জবাবদিহিতার কিছু রইল না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক জানান, স্কুলের সীমানা প্রাচির ভেঙে সড়ক বড় করার ফলে স্কুলটি এখন উন্মুক্ত হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুলের সামনের সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। তারা জানান, প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত কুমার বেশির ভাগ সময় উপজেলা শিক্ষা অফিসে সময় কাটাতেন । স্কুলে সময় কম দিতেন। পাঠদান থেকেও নিজেকে বিরত রাখতেন। এসব অনিয়ম নিয়ে এলাকার কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে উল্টো রাজনৈতিক নেতাদের দিয়ে হুমকি-ধামকি দিতেন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক রঞ্জিত কুমার দাস বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওঠা সবগুলো অভিযোগ মিথ্যা। সব কাজগুলো যথাযথ নিয়ম মেনে হয়েছে।

এ বিষয়ে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পুরাতন ডেস্ক-বেঞ্চ থেকে আমি ১৬ জোড়া ডেস্ক-বেঞ্চ মুছেগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে দিয়েছি। এছাড়া আর কোনো বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।