নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় এবার এক আওয়ামী লীগ নেতার বাসায় তান্ডব চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। বড়লেখা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিনের কোর্ট সংলগ্ন বাসায় এই তাণ্ডব চালানো হয়েছে। এসময় বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাটও করা হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
হামলার সময় ওই আওয়ামী লীগ নেতার পরিবারের লোকজন বাসা থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন। ঘটনার পর তারা প্রাণের ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। এতে তারা চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। যেকোনো সময় তাদের ওপর আবার হামলা হতে পারে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এদিকে বড়লেখা থানায় পুলিশ না থাকায় তারা আইনী কোনো সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
এর আগে ৫ আগস্ট সরকারের পতনের দিন বিকেলে স্থানীয় এমপি ও সাবেক পরিবেশ মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনসহ অর্ধশত আওয়ামী লীগ নেতার বাড়ি-ঘর, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে, ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একেএম হেলাল উদ্দিন নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে চাকরির পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। হেলাল উদ্দিনের ছেলে মেধাবী ছাত্র ফরহাদ হোসেন ফাহিম বর্ণি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং ভাতিজা আব্দুল কাদির মোহাম্মদ আরিফ বর্ণি ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সেক্রেটারী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। দলে তাদের আলাদা জনপ্রিয়তা রয়েছে। যার কারণে তার পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে।
এদিকে ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপরই বড়লেখা উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা দেশী অস্ত্র নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নারীশিক্ষা একাডেমি ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ একেএম হেলাল উদ্দিনের কোর্ট সংলগ্ন বাসায় তাণ্ডব চালায়। এসময় হামলাকারীরা বাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরে বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। হামলার বিষয়টি আঁচ করতে পেরে হেলাল উদ্দিনের পরিবার দ্রুত সরে পড়েন। তারা এখন অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন।
বুধবার দুপুরে আওয়ামী লীগ নেতা একেএম হেলাল উদ্দিনের বাসায় গিয়ে দেখা গেছে, বাসায় কেউ নেই। তবে হামলার খবর পেয়ে মানুষজন দেখতে আসছেন। আসবাবপত্র ভাঙা। মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে।
মুঠোফোনে আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল উদ্দিনের ছেলে বর্ণি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন ফাহিম জানান, আমাদের পুরো পরিবার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। আমার বাবা একজন শিক্ষক। দলে ও এলাকায় তার জনপ্রিয়তা রয়েছে। আমরা কোনোদিন কারও ক্ষতি করিনি। আ. লীগ সরকার পতনের পর বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাসায় যে তাণ্ডব চালিয়েছে তা নজিরবিহীন। আমরা হামলার আগে ঘর থেকে সরে যাওয়ায় বেঁচে গেছি। নাহলে হয়ত বড়ধরনের ক্ষতি হত। শুধু আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কারণে আমাদের বাসায় হামলা হয়েছে। আমরা এর বিচার কাছে চাইব?
এবিষয়ে জানতে বড়লেখা থানার ওসি সঞ্জয় চক্রবর্ত্তীর মুঠোফোনে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।