নিজস্ব প্রতিবেদক :: মৌলভীবাজারের বড়লেখায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে উপজেলার বিভিন্নস্থানে উড়ে গেছে অসংখ্য কাঁচা ও আধাপাকা ঘরের টিনের চাল। ঝড়ে প্রায় শতাধিক স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। কোথাও কোথাও বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। ফলে রাত থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এদিকে ঝড়ে বড়লেখা পৌরসভার আধাপাকা ভবনের টিনের চাল উড়ে গেছে। এতে কম্পিউটার ও মূল্যবান কাগজপত্র ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।
এর আগে গত শনিবার বড়লেখার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে শত শত কাঁচা ও আধাপাক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেক এলাকায় গাছ পড়ে, খুঁটি ভেঙে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) রাত সাড়ে নয়টার দিকে বড়লেখা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের সঙ্গে শুরু হয় শিলাবৃষ্টি। প্রায় আধাঘন্টাব্যাপী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে বড়লেখা পৌরসভা, উত্তর শাহবাজপুর, দক্ষিণ শাহবাজপুর, তালিমপুর, দাসেরবাজার, বর্ণি, দক্ষিণভাগ উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় অসংখ্য কাঁচা ও আধাপাকা ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। ঝড়ে এসব এলাকার প্রায় শাতাধিক স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে। কোনো কোনো এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। ফলে রাত থেকে এসব বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। তবে কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
বড়লেখা পৌরসভার মেয়র আবুল ইমাম মো. কামরান চৌধুরী বুধবার বিকেলে বলেন, ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের বড়লেখা পৌর ভবনের টিনের চাল উড়ে গেছে। এতে কম্পিউটার ও মূল্যবান কাজগপত্র ভিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া পৌরসভার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি ক্ষতি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কয়েকটি জায়গায় খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এখনও অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুতবিহীন রয়েছে।
উত্তর শাহবাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন বলেন, ঝড়ে তার ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের অর্ধশত ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গেছে। এর আগে শিলাবৃষ্টিতে ৫ শতাধিক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠালেও এখনও কোনো সরকারি সহায়তা মিলেনি।
দক্ষিণভাগ উত্তর ইউপির চেয়ারম্যান এনাম উদ্দিন বলেন, গতরাতে বয়ে যাওয়া ঝড়ে তার এলাকার শ’খানেক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আগে ঝড় ও শিলায় তার ইউনিয়নের অনেক ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংশ্লিষ্টদের কাছে প্রেরণ করলেও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কোনো সহায়তা পায়নি।
তালিমপুর ইউপির চেয়ারম্যান এখলাছুর রহমান বলেন, ঝড়ে অনেক অনেক ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। অনেকের টিনের চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুত নেই।
পল্লীবিদ্যুতের শাহবাজপুর অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ রেজাউল করীম বলেন, ঝড়ে উত্তর শাহবাজপুর ও দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নে ছয়টি স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। শতাধিকস্থানে গাছ পড়ে তার ছিড়ে গেছে। আমরা ভোর থেকে লোকজন নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন মেরামতের জন্য কাজ করছি। কাজ শেষ হলে শীগ্রই লাইন চালু করা হবে।
বড়লেখা পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির এজিএম মুহাম্মদ শহীদুল ইসলামের মুঠোফোনে কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।