লাতু ডেস্ক:: দুই বছর আগে পরিত্যক্ত হয়েছিল সিলেট গ্যাস ফিল্ডের অধীনস্থ কৈলাশটিলার ২নং কূপ। দীর্ঘ ৩২ বছর উৎপাদনে থাকা এই কূপটি ২০২১ সালে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু দেশীয় খননকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্সের অনুসন্ধানে সেখানে গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এরপর থেকে শুরু করা হয় পুনঃখনন কাজ।
ইতিমধ্যে শেষ পর্যায়ে রয়েছে প্রক্রিয়া। যে কোনো সময় সিলেট থেকে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হতে যাচ্ছে ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস। গতকাল শেষবারের মতো কূপটি ক্লিনিং করা হয়। এরপর সেটিতে পরীক্ষামূলক গ্যাস উত্তোলনের কথা রয়েছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ড কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন- গত ২৭ জুলাই এই কূপ পুনঃখনন (ওয়ার্কওভার) কাজ শুরু করা হয়। খননের পর চলতি সপ্তাহে এই কূপে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়।
জ্বালানি সংকট নিরসনে গ্যাস উৎপাদন বাড়াতে দেশের ৪৬টি কূপ অনুসন্ধান, খনন ও পুনঃখননের পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। ২০২৫ সালের মধ্যে এসব খননকাজ শেষ হওয়ার কথা। এতে ৬১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদন বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সিলেট গ্যাস ফিল্ড লিমিডেডের (এসজিএফএল) আওতাধীন ১৪টি কূপ খনন ও পুনঃখননের কাজ চলছে। সিলেটের ১৪টি কূপের মধ্যে তিনটির খননকাজ থেকে গত বছর থেকে উৎপাদন শুরু হয়। এবার আরেকটি কূপ উৎপাদন শুরুর অপেক্ষায় রয়েছে।
কৈলাশটিলা গ্যাস কূপ-২ এর প্রকল্প কর্মকর্তা জানিয়েছেন- খুব শিগগিরই এই কূপ থেকে আমরা গ্যাস পাবো বলে আশা করছি। কাজ একেবারেই শেষ পর্যায়ে। এখন পরীক্ষা করা হবে। এরপর সেটি জাতীয় গ্রিডে সরববাহ করা হবে। এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান- এই কূপ থেকে দৈনিক ৭০ ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন করা যেতে পারে। এ কূপের ওয়ার্কওভারে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৭১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা, যা এসজিএফল’র নিজস্ব অর্থায়নে করা হচ্ছে। এর আগে গত বছর সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের আওতাধীন সিলেট-৮, কৈলাশটিলা-৭ ও বিয়ানীবাজার-১ নামে তিনটি পরিত্যক্ত কূপ পুনঃখনন করা হয়। এসব কূপ থেকে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে সরবরাহ করা হচ্ছে। বর্তমানে এসজিএফএল’র ১৩টি কূপ গ্যাস উৎপাদনে রয়েছে। এগুলো থেকে দৈনিক ৯৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হচ্ছে।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন- সিলেটে পরিত্যক্ত কূপ থেকে গ্যাস পাওয়ার বিষয়টি খুবই আশাব্যঞ্জক। এতে করে আমাদের উৎপাদন বাড়ছে। এরই মধ্যে সিলেট-১০ নম্বর কূপটি খনন করা হচ্ছে। এই কূপ থেকে খুব দ্রুত উৎপাদনে যাওয়া যাবে।