রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

বড়লেখায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে শিক্ষকের হত্যার হুমকি, তদন্তে প্রমাণ পেল পিবিআই



বিজ্ঞাপন

নিজস্ব প্রতিবেদক:: বাবার চিকিৎসার জন্য এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চার লাখ সত্তর হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন এক শিক্ষক। শর্ত ছিলো জমি বিক্রি করে তিনি সেই টাকা পরিশোধ করবেন। কিন্তু নির্ধারিত মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও টাকা পরিশোধ তো দূরের কথা উল্টো টাকা নেওয়ার বিষয়টিও অস্বীকার করেছেন তিনি। এমনকি পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজারের বড়লেখায়। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম তোফায়েল আহমদ লায়েক (৩৫)। তিনি উপজেলার হরিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং গাংকুল গ্রামের ফয়জুল হকের ছেলে।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফরিদ আলী (৫২) গত বছরের অভিযুক্ত শিক্ষক তোফায়েল আহমদ লায়েকের (৩৫) বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা (নং-৩৮০) করেন।

আদালত মামলাটি তদন্ত করে আগামী ২৫ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে নির্দেশ দেন।

এদিকে ঘটনাটি তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে ব্যবসায়ীকে প্রাণ নাশের হুমকির প্রমাণ পেয়েছে পিবিআই। তদন্ত শেষে স¤প্রতি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন পিবিআই মৌলভীবাজার কর্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম।

অভিযোগ, আদালত ও পিবিআই সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী ফরিদ আলী ও অভিযুক্ত শিক্ষক তোফায়েল আহমদ লায়েক উপজেলার গাংকুল গ্রামের বাসিন্দা। ফরিদের ছেলে-মেয়েদের প্রাইভেট পড়াতেন শিক্ষক তোফায়েল। সেই সুবাদে তাদের মধ্যে সম্পর্ক ছিল। ২০২০ সালের ১৪ মে শিক্ষক তোফায়েল তার বাবার চিকিৎসার জন্য ফরিদের কাছ থেকে চুক্তিনামার মাধ্যমে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা ধার নেন। শর্ত ছিলো একমাসের মধ্যে জমি বিক্রি করে সেই টাকা ফেরত দেবেন তোফায়েল। এরমধ্যে বাবার চিকিৎসার জন্য আবারও টাকা ধার চাইলে ব্যবসায়ী ফরিদ সরল বিশ্বাসে ওই বছরের ১৪ জুলাই তাকে আরও ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা প্রদান করেন। নির্ধারিত সময়ে শিক্ষক তোফায়েল ব্যবসায়ী ফরিদের পাওনা টাকা পরিশোধ না করে জমি বিক্রি করতে দেরি হচ্ছে-এমন অজুহাত দেখিয়ে পুনরায় ফরিদের কাছে টাকা ধার চাইলে একই বছরের ১৪ আগস্ট ফরিদ তোফায়েলকে চুক্তিনামার মাধ্যমে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা দেন। প্রায় তিন মাস পর ফরিদ তোফায়েলের কাছে পাওনা টাকা ফেরত চাইলে তিনি আইনি জটিলতার কারণে জমি বিক্রি করতে পারছেন না বলে জানান। পরে ফরিদ আইনি জটিলতা দূর করে জমি রেজিস্ট্রি করে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিলেও তাতে সম্মতি দেন তোফায়েল। কিন্তু দীর্ঘদিন পর জমি রেজিস্ট্রে করে না দেওয়ায় ২০২২ সালের ০১ অক্টোবর স্থানীয় মুরব্বিদের নিয়ে তোফায়েলের বাড়িতে গেলে তিনি ফরিদকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফরিদ আলী ওই বছরে অভিযুক্ত শিক্ষক তোফায়েল আহমদ লায়েকের (৩৫) বিরুদ্ধে বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন।

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফরিদ আলী শনিবার বিকেলে বলেন, শিক্ষক তোফায়েল আহমদ লায়েক তার বাবার চিকিৎসার কথা বলে আমার কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিয়েছেন। টাকা ফেরত দেওয়ার নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও তিনি আমার পাওনা টাকা দিচ্ছেন না। নানা টালবাহানা করছেন। টাকা চাওয়ায় প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। আমি ন্যায় বিচারের জন্য আদালতে মামলা করেছি।

পিবিআই মৌলভীবাজার কর্যালয়ের পুলিশ পরিদর্শক নজরুল ইসলাম শনিবার (২৬ আগস্ট) বিকেলে মুঠোফোনে বলেন, তদন্তে প্রাথমিকভাবে শিক্ষকের বিরুদ্ধে পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে হুমকি দেওয়ার প্রমাণ মিলেছে। তদন্ত শেষে সম্প্রতি আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।