লাতু ডেস্ক: তিন মাসের ব্যবধানে দুই স্বামীকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছেন শারমিন বেগম (২৫)। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষাও যেন হারিয়ে ফেলেছেন স্বজনরা। শারমিন কিছুক্ষণ পরপর বলছেন, আমার সব শেষ হয়ে গেলো।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে পিকআপের মুখোমুখি সংঘর্ষে নারীসহ ১৪ শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন। বুধবার (৭ জুন) ভোর সাড়ে ৫টায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের নাজিরবাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে ১২ জনই সুনামগঞ্জের। এদের মধ্যে একজনের নাম দুলাল মিয়া (২৬)। তিনি সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের মৃত হারুন মিয়ার ছেলে। দুলালের স্ত্রী শারমিন বেগম।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্র জানায়, নিহত দুলাল মিয়ার বড় ভাই হেলাল আহমদ প্রায় তিন মাস আগে একটি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তিনি স্ত্রী শারমিন বেগম (২৫) ও দুই সন্তানকে রেখে গেছেন। পরে ছোট ছোট দুই সন্তানকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন শারমিন। তার এ অসহায়ত্বের কথা চিন্তা করে পরিবারের সিদ্ধান্তেই শারমিনকে বিয়ে করেন দুলাল মিয়া। তবে দুলাল মিয়ার সঙ্গেও বেশিদিন ঘর করা হলো না শারমিনের।
নিহত দুলাল মিয়ার ফুপাতো ভাই মো. শাহীন বলেন, দুলালের বড় ভাই হেলাল আহমদ প্রায় তিন মাস আগে দুর্ঘটনায় মারা যান। দুই মাস আগে পরিবারের লোকজন হেলালের স্ত্রী শারমিন বেগমের সঙ্গে দুলাল মিয়ার বিয়ে দেন। বিয়ের দুই সপ্তাহ পর কাজের জন্য সিলেটে আসেন দুলাল। থাকতেন আম্বরখানা সাপ্লাই এলাকার ভাড়া বাসায়। দুলালের মৃত্যুতে স্ত্রী শারমিন বেগম দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এদিকে বিকেলে দুলালের লাশবহনকারী অ্যাম্বুলেন্স শান্তিগঞ্জ উপজেলার মুরাদপুর গ্রামে পৌঁছালে কান্নার রোল পড়ে চারদিকে। মরদেহ দেখতে ছুটে আসেন এলাকাবাসী। জানাজা শেষে এলাকার কবরস্থানে দাফন করা হয় তার মরদেহ।
প্রসঙ্গত, বুধবার ভোরে উঠে ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে যাওয়ার জন্য পিকআপে উঠেন সৌরভসহ ৩০ জন নির্মাণ শ্রমিক। পথে ভোর সাড়ে ৫টার দিকে দক্ষিণ সুরমায় নাজিরবাজার এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মালবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে তাদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে সৌরভসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন ১২ জন।