নিজস্ব প্রতিবেদক:: মৌলভীবাজারের বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২২ সালে ১২৫২ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যা ওই বছরের মোট দায়েরকৃত মামলার ১১৩ শতাংশ এবং আদালত চালুর পর এক বছরে সর্বাধিক মামলা নিষ্পত্তির ঘটনা। আদালতের বিচারক মোহাম্মদ জিয়াউল হক এসব মামলা নিষ্পত্তি করে অনন্য নজির স্থাপন করেছেন। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তিতে বিচারপ্রার্থী, আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টরা আদালতের ওপর বেশ সন্তুষ্ট বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০০৪ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত (চৌকি আদালত) বিচারিক কার্যক্রম শুরু করে। অনেক মামলার বাদী, তদন্ত কর্মকর্তা, চিকিৎসকসহ মামলা সংশ্লিষ্টরা যথাসময়ে আদালতে হাজির না হওয়ায় বিচারকার্য বিলম্বিত হচ্ছিল। এতে বিচারপ্রার্থীরাও ভোগান্তির শিকার হন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওই আদালতে যোগদানের পর মামলা জট নিরসনে বিশেষ উদ্যোগী হন। তাঁর ভূমিকায় মামলা সংশ্লিষ্টরা আদালতে হাজির ও মামলা নিষ্পত্তিতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। তাঁর বিশেষ ভূমিকায় ২০২২ সালে ১২৫২ মামলা নিস্পত্তি হয়েছে। যা ওই আদালতে দায়েরকৃত মামলার ১১৩ শতাংশ। ওই বছরের ১ জানুয়ারি বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলা ছিল ৯৯৬ টি। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে সামগ্রিকভাবে নতুন ১১১০ টি মামলা দায়ের হয়। ফলে এ বছরে আদালতে বিচারাধীন মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়ায় ২১০৬ টি। বিচারাধীন এই ২১০৬ টি মামলা থেকে সর্বমোট ১২৫২ টি মামলা নিস্পত্তি শেষে ২০২৩ সালের শুরুতে ৮৫৪ টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। ২০২২ সালে দায়েরকৃত মামলার অনুপাতে এ আদালতে ১১৩ শতাংশ মামলা নিস্পত্তি হয়েছে।
সূত্র মতে, এই আদালতে এক বছরে (২০২২) বিচার ফাইলের মোট ৩৫৭ টি মামলার কার্যক্রম শেষ হয়েছে। এই সময়কালে থানায় ২৬৩ টি মামলা দায়ের হয়। যার বিপরীতে থানায় দায়ের হওয়া এমন ৪৪৭ টি মামলা আদালতের আমল ফাইল থেকে নিস্পত্তি করা হয়।
এদিকে এই সময়ে মোট ২৪ টি মামলার রায়ে প্রথমবারের মতো অপরাধে জড়িত হয়েছে এমন অপরাধীদের জেলে পাঠানোর পরিবর্তে সংশোধনমূলক আদেশ দিয়ে প্রবেশনে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জিয়াউল হক। এসব অপরাধীদের জনস্বার্থে নিয়োজিত বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের অধীনে জনসেবামূলক কাজসহ সংশোধন উপযোগী নানা রকম শর্ত পূরণ করতে দেওয়া হয়েছে।
আদালতের সহকারী আইন কর্মকর্তা আইনজীবী গোপাল দত্ত বলেন, বড়লেখা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০২২ সালে ১২৫২ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোহাম্মদ জিয়াউল হক এই মামলাসমূহ নিস্পত্তি করেন। বিজ্ঞ আইনজীবীবৃন্দ, বড়লেখা থানা পুলিশ, কোর্ট পুলিশ, বিচারপ্রার্থী জনগণ ও সংশ্লিষ্টদের সার্বিক সহযোগিতায় বিজ্ঞ আদালতের পক্ষে বিশাল পরিমাণ মামলা নিষ্পত্তির এই কর্মসম্পাদন সম্ভব হয়েছে।