জুড়ী প্রতিনিধি:: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের কচুরগুল নালাপুঞ্জি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ৮ রোহিঙ্গা ও ১ বাংলাদেশীসহ ৯ জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) ভোরে গোয়ালবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান স্থানীয়দের সহযোগিতায় এদের আটক করেন।
জানা গেছে, বুধবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী কচুরগুল নালাপুঞ্জি এলাকায় কয়েকজন লোককে সন্দেহজনক ভাবে ঘুরাফেরা করতে দেখেন স্থানীয়রা। সাথে সাথে ইউপি চেয়ারম্যানকে বিষয়টি অবগত করা হয়। এমন খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম তৎপর হয়ে ওঠেন। স্থানীয়দের সহযোগীতায় সন্দেহ জনক অবস্থায় ৩ মহিলা ও ২ শিশুসহ ৯ জন বক্তিকে আটক করে ইউপি কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে ৫২ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর এসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর নূর হোসেন, জুড়ী থানার এস.আই আব্দুল মান্নান ও সাংবাদিকবৃন্দ সেখানে উপস্থিত হন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানায়, তারা ৮ জন রোহিঙ্গা ও একজন বাংলাদেশী নাগরিক। রোহিঙ্গারা ভারতে যাবার উদ্দেশ্যে ১৩ ডিসেম্বর ভোরে চট্টগ্রাম থেকে মৌলভীবাজার আসে। সেখানে দালালের পাঠানো সিএনজি গাড়ী যোগে তারা জুড়ীর সীমান্ত এলাকায় পৌঁছায়। সেখানে সুমন নামে এক দালালের বাড়ীতে তারা অবস্থান নেয়। রাত সোয়া ৯ টায় লঙ্গরখানা এফআইভিডিবি বিদ্যালয় সংলগ্ন সীমান্ত দিয়ে ওরা ভারতে প্রবেশ করে। ভারতীয় সীমান্তে অপেক্ষমান অপর দুই দালাল তাদের নিজ হেফাজতে নিয়ে দিল্লীতে আত্মীয়ের কাছে পাঠানোর উদ্দেশ্যে একটি বাসে উঠায়। সেখানে বাসে তল্লাশী চালিয়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে শারীরিক নির্যাতন করে গভীর রাতে নালাপুঞ্জি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে।
আটককৃতরা হলো- ১. মো: ইসমাঈল (১৬), পিতা: আবুল কাসেম, গ্রাম: তাইংখালী, থানা: উখিয়া, ২. মো: সায়েদ (১৮), পিতা: মো: রফিক, গ্রাম: কুতুপালং ক্যাম্প-৫, ৩. নূর কামাল (১৮), পিতা: মৃত নূর হোসেন, গ্রাম: কুতুপাল ক্যাম্প-৭, ৪. তোসিম (১৩), পিতা: মোক্তার হোসেন, গ্রাম: নাইক্ষংছড়ি, বান্দরবন, ৫. সিনুয়ারা (৩০), স্বামী: মোক্তার হোসেন, গ্রাম: নাইক্ষংছড়ি, বান্দরবন, ৬. আমিরা (৪), পিতা: মোক্তার হোসেন, নাইক্ষংছড়ি, বান্দরবন, ৭. তাহেরা বিবি (২০), স্বামী: রাজা মিয়া, বালুখালী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প-৮ টেকনাফ, ৮. সোহিদা বিবি (১৯), স্বামী: রহমতুল্লাহ, আলীখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ডি ২১, টেকনাফ এবং রায়হান (৪২), পিতা: আব্দুল খালেক, গ্রাম: নরসিংপুর, থানা: ফকিরহাট, নোয়াখালী।
এবিষয়ে গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বুধবার ভোরে এলাকায় সন্দেহজনক ভাবে ঘুরাফেরার সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় ৯ জনকে আটক করা হয়। তন্মধ্যে ৮ জন রোহিঙ্গা ও একজন বাংলাদেশী সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়।
জুড়ী থানার এস.আই আব্দুল মান্নান জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে আটককৃতদের মধ্যে ৮ জন রোহিঙ্গা ও ১ জন বাংলাদেশি। তাদের থানায় নেয়া হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।