লাতু ডেস্ক:: স্ত্রীর মামলায় মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুক আহমদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন মৌলভীবাজার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালত। নারী নির্যাতন ও যৌতুক দাবির মামলায় বিজ্ঞ আদালত থেকে জামিন নিয়ে জামিনের শর্ত ভঙ্গ এবং আদালতে হাজির না হওয়ায় সোমবার এই ওয়ারেন্ট জারি করেছেন বিজ্ঞ বিচারক মুহাম্মদ আলী আহসান।
৩০ জুন ‘নারী নির্যাতন ও যৌতুক দাবির’ অভিযোগে মৌলভীবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছিলেন তার ২য় স্ত্রী শিরীন আক্তার। তখন আদালত আসামি মাসুক আহমদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তিনি আপসের শর্তে আদালত থেকে জামিন নেন। কিন্তু আদালতে হাজির না হওয়ার কারণে এবং জামিনের শর্তগুলো ভঙ্গ করায় সোমবার আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
জানা যায়, ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উপজেলার ফুলতলা বাজারের বাসিন্দা মৃত আজন মিয়ার পুত্র বর্তমান ফুলতলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদের সঙ্গে কুলাউড়া উপজেলার আমতৈল গ্রামের মৃত মোবারক আলীর মেয়ে শিরীন আক্তারের বিয়ে হয়। তাদের বর্তমানে ১৯ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। শিরীন আক্তার অভিযোগ করেন মাসুক আহমদ মুলত একজন বিয়ে পাগল ও যৌতুক লোভী মানুষ। বিয়ের পর ব্যবসা করার জন্য ৭ লাখ ও চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ মোট ১০ লাখ টাকা তার কাছ থেকে নেন। কিন্তু এতে মাসুক আহমদের লোভ আরও বেড়ে যায়।
তিনি ব্যবসার জন্য আরও ২০ লাখ টাকা আনতে স্ত্রীকে চাপ দেন। স্বামীর চারিত্রিক অবক্ষয় ও টাকার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ও টাকা দিতে না পারায় শুরু হয় তার উপর অমানসিক নির্যাতন। টাকার জন্য ২৭শে এপ্রিল বুধবার এবং ২৫ জুন শনিবার দু’দফা নির্যাতন করেন মাসুক আহমদ। তখন মাকে রক্ষা করতে গিয়ে মেয়েও নির্যাতনের শিকার হয়। ২য় ঘটনার পর মেয়েসহ শিরীন আক্তারকে বাসা থেকে তাড়িয়ে দেন তিনি। নিরুপায় হয়ে মেয়েসহ শিরীন আক্তার কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর ইউনিয়নে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। ২য় ঘটনার পর নির্যাতনের শিকার তার স্ত্রী শিরীন আক্তার মাসুক আহমদের বিরুদ্ধে জুড়ী থানায় লিখিত অভিযোগ নিয়ে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে ২৮ জুন আদালতের দ্বারস্থ হন শিরীন আক্তার।
শিরীন আক্তার অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা হওয়ায় মাসুক আহমদ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে উল্টো তাকে সংসার করতে হলে ২০ লাখ টাকা দিতে হবে বলে জানান। এ ধরনের কথাবার্তায় তিনি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। শিরীন জানান মাসুক আহমদের সংসারে তিনি ২য় স্ত্রী। তার সঙ্গে বিরোধ লাগার পর পরই বাড়ির কাজের বুয়া স্বামী পরিত্যক্তা মনি বেগমকে বিয়ে করে ফুলতলার বাড়িতে রেখেছেন। প্রথম স্ত্রীও জুড়ী শহরের একটি বাসায় বসবাস করেন।
বাদীর আইনজীবী পিপি সুবিমল লিন্ডকিরি জানান, জামিনের শর্ত ভঙ্গ ও শুনানির তারিখে অনুপস্থিত থাকায় সোমবার বিজ্ঞ আদালত মাসুক আহমেদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়না জারি করেন। সূত্র : মানবজমিন