রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

হবিগঞ্জে এক মাসে ৬ খুন



বিজ্ঞাপন

নিউজ ডেস্ক: হবিগঞ্জ জেলায় গত মে মাস ছয়টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শুধু বানিয়াচং উপজেলায় তিনটি হত্যার ঘটনা ঘটে। এছাড়া হবিগঞ্জ সদর, নবীগঞ্জ এবং আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় একটি করে খুন হয়।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ছেলের হাতে মা, জেদের কারণে মামীর হাতে ভাগ্নে, ভাগ্নের হাতে মামা, ছোটদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে বড়দের সংঘর্ষ, বিয়ের আলোচনায় আমন্ত্রণ না পাওয়ার ক্ষোভে হবু বরকে খুন ও সন্ধ্যায় হাতাহাতির জেরে পরদিন সকালে দুইপক্ষের সংঘর্ষে এসব হত্যার ঘটনা ঘটে।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ মে সন্ধ্যায় আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কাকাইলছেও বাজারে শের আলী এবং কামাল মিয়া নামে দুইজনের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরদিন সকালে উভয় গোষ্ঠির লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লে কামাল মিয়া নিহত ও অন্তত ৫০ জন নারী-পুরুষ আহত হন। পুলিশ দাঙ্গার সঙ্গে জড়িত ৩৪ জনকে আটক করেছে।

১২ মে বানিয়াচং উপজেলার পুরান পাথারিয়া গ্রামের কালু মিয়া ও তার চাচাতো মামা জাহির মিয়ার মধ্যে বাগ-বিতণ্ডা হয়। এ সময় ধানের খড় শুকানোর কাজে ব্যবহৃত লাঠির মাথায় লাগানো লোহার ফিকল দিয়ে জাহির তার মামা কালু মিয়ার বুকের বামপাশে আঘাত করেন। পরে তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ব্যক্তির ভাগ্নে অভিযুক্ত জহিরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

১৯ মে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শৈলজুড়া গ্রামে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে সজিব মিয়া নামে এক যুবক খুন হন। ঘটনার পর উজ্জ্বল মিয়া নামে আরেক যুবক সজিবকে খুন করেছেন বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সজিবের সঙ্গে উজ্জ্বলের শ্যালিকার বিয়ের আলোচনা চলছিল। এ আলোচনায় বড় জামাই হিসেবে নিমন্ত্রণ না পাওয়ার ক্ষোভ থেকেই উজ্জ্বল খুন করেছেন বলে স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন।

২৩ মে শিশুদের ফুটবল খেলা নিয়ে ঝগড়াকে কেন্দ্র করে নবীগঞ্জ উপজেলার কলাবরপুর গ্রামে আবুল মিয়া ও আব্দুল মতিনের পরিবারে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দিলবর মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনায় ফারুক মিয়া নামে একজনকে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ গ্রেফতার করে।

২৬ মে বানিয়াচং উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী ও আব্দুল বারিক নামে দুইজনের বিরোধ মীমাংসায় একটি সামাজিক বিচার বসে। এ সময় দুইপক্ষে পুনরায় সংঘর্ষ হলে ফিকলের আঘাতে মোহাম্মদ আলীর মা বৃদ্ধ গোলাপজান বিবি মারা যান এবং পুলিশ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মোহাম্মদ আলী জানান, নিজের ফিকলের আঘাতেই তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে।

গত ২৭ মে বানিয়াচং উপজেলার আদর্শ গ্রামের জলাশয় থেকে মোহাম্মদ আলী নামে তিন মাস বয়সী শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে হত্যার দায় স্বীকার করে ওই শিশুর মামী তুলুনা বেগম আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।


স্বীকারোক্তিতে তিনি জানান, শিশুটিকে ঘরের বিছানায় রেখে তার মা পার্শ্ববর্তী বিয়ে বাড়িতে গিয়েছিলেন। এ সুযোগে তুলুনা বেগম শিশু মোহাম্মদ আলীকে জীবিত অবস্থায় জলাশয়ে ফেলে দেন। শিশু মোহাম্মদ আলীর নানী (তুলুনার শাশুড়ি) মোহাম্মদ আলীকে তার একমাত্র মেয়ের চেয়ে বেশি আদর করতেন। এজন্য তুলুনার হিংসা হতো। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি মোহাম্মদ আলীকে হত্যা করেছেন।