নিউজ ডেস্ক: হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধে চাচাতো ভাইকে ফাঁসাতে বৃদ্ধ মা গোলাপ চান বিবিকে (৬৫) টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করেন ছেলে।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলামের আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানায় ছেলে মোহাম্মদ আলী (৩৫)।
পুলিশ জানায়, উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামে প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে ফাঁসানোর জন্য মোহাম্মদ আলী তার মাকে হত্যা করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দিতে তিনি জানান, তার চাচাত ভাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ চলছিল। বুধবার (২৬ মে) সকালে এ বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাড়িতে সালিশ বসে। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়। এসময় চাচাতো ভাই কাদিরকে ফাঁসাতে রাগের মাথায় টেঁটা দিয়ে মাকে আঘাত করেন তিনি। কিছুক্ষণ পরই মা মারা যান।
এরপর তার মাকে কাদির ও তার লোকজন হত্যা করেছে বলে চিৎকার শুরু করেন। এসময় গ্রেফতার এড়াতে কাদির মিয়া ও তার পক্ষের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।
কিছুক্ষণ পর মোহাম্মদ আলীর নানা বাড়ির আত্মীয় মন্নর আলী, সফর আলী, আশিক মিয়ার নেতৃত্বে কাদিরের বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
বানিয়াচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরান হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্ল্যাহসহ পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পুলিশের একাধিক টিমের তদন্ত করেও ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারছিল না।
পরে পুলিশ নিহতের ছেলে মোহাম্মদ আলী, তার স্ত্রী, সন্তানসহ কয়েকজনকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর হত্যাকাণ্ডটি মোহাম্মদ আলীই ঘটিয়েছে নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে আটক করে।
এসপি মোহাম্মদ উল্ল্যাহ বলেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজের মাকেই টেঁটাবিদ্ধ করে হত্যা করেন ছেলে মোহাম্মদ আলী।
তিনি আরও বলেন, বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য পুলিশ তদন্ত করছে। যেহেতু সংঘর্ষ হয়েছে সেহেতু আরও কয়েকজন এতে জড়িত থাকতে পারেন। জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।
এদিকে মোহাম্মদ আলীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।