হবিগঞ্জে ক্রমেই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এ পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়া ৪৮ জনের মাঝে ২২ জনই ডাক্তার, নার্স ও প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী। এত সংখ্যক সরকারি চাকুরের আক্রান্তের খবরে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এমন অবস্থায় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ সাধারণ মানুষের আরও সচেতন হওয়ার বিকল্প নেই বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্যে জানা যায়, জেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় গত ৯ এপ্রিল। নারায়ণগঞ্জ জেলা থেকে আসা ওই ব্যক্তি পেশায় একজন ট্রাকচালক। এরপর বেশ কিছুদিন আর কেউ আক্রান্ত হননি। কিন্তু ২০ এপ্রিল একদিনেই লাখাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন ডাক্তার ও নার্সসহ মোট ১০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হন। পরদিন ২১ এপ্রিল লাখাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরও একজন নার্স আক্রান্ত হন। এত সংখ্যক আক্রান্ত হওয়ায় নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ২১ এপ্রিল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
যদিও এতে লাভ হয়নি, প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে যুক্ত হচ্ছে ডাক্তার, নার্স, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর নাম। আক্রান্তের তালিকায় আছেন চুনারুঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তার ও ব্রাদার এবং মাধবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ব্রাদারসহ বেশ কয়েকজন।
তবে এতদিনে সদর উপজেলায় কোনো রোগী শনাক্ত না হলেও সর্বশেষ গেল ২৫ এপ্রিল একদিনেই ২০ জন আক্রান্ত হন। যাদের ১৫ জনই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। বাকি ১১ জন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর আধুনিক হাসপাতালের স্টাফ। তাদের মধ্যে রয়েছেন ডাক্তার, নার্স, ল্যাব টেকনিশিয়ান ও অ্যাম্বুলেন্স চালক।
আর বাকি ৪ জন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা কর্মচারী। তাদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটসহ আরও ২ জন নির্বাহী ম্যাজিস্টেট রয়েছেন। অপরজন একজন নাজির। সবশেষ ২৬ এপ্রিল রাতে একজন সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আক্রান্ত হন বলে জানানো হয়। সবমিলিয়ে জেলায় ডাক্তার, নার্স, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ ২২ জন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত।
এ বিষয়ে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুখলেছুর রহমান উজ্জ্বল জানান, জেলায় মোট ৪৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে ডাক্তার ও নার্সসহ স্বাস্থ্য বিভাগের ১৭ জন এবং প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারী ৫ জন রয়েছেন।