রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ খ্রীষ্টাব্দ | ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ



Sex Cams

                    চাইলে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন

মৌলভীবাজারে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবায় ভয়াবহ চিত্র
বিশেষ প্রতিবেদক

বিশেষ প্রতিবেদক



বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের রোগীদের জন্য নেই স্বাস্থ্য বিভাগ নির্দেশিত যথাযথ চিকিৎসক কিংবা ডিপ্লোমাধারী নার্স। নেই স্বাস্থ্য বিভাগের লাইসেন্স ও পরিবেশের ছাড়পত্র। অপিরচ্ছন্ন ও নোংরা পরিবেশে দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা! তাছাড়া অপারেশনে (ওটি) ব্যবহৃত যন্ত্রাদিতে পড়েছে মরিচা।


আরো ভয়াবহ বিষয় হলো অধিকাংশ ডায়গনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়ের আগেই সাক্ষর করে রাখা হচ্ছে রিপোর্ট। বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নিবন্ধনের জন্য শর্ত হিসেবে অনলাইনে যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছে, বাস্তবে তার অনেক কিছুই নেই।

এরকম বিভিন্ন অসঙ্গতি আর ত্রুটির মধ্য দিয়েই চলছে মৌলভীবাজার সদরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এধরনের নানা অনিয়মের অভিযোগে মৌলভীবাজার শহরের চারটি বেসরকারি হাসপাতালকে জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট। এজন্য আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল ত্রুটি নিরসনের জন্য বলা হয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

গত মঙ্গল ও বুধবার (২০-২১ আগস্ট) জেলা প্রশাসন, মৌলভীবাজার পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পুলিশ বিভাগের যৌথ অভিযানে হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, লাইসেন্স, পর্যাপ্ত চিকিৎসক, ডিপ্লোমাধারী নার্সসহ সেবাদানের জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো প্রস্তুত কি না তা যাচাই করতেই এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।


এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন ড. শাহজাহান কবির চৌধুরী বলেন, ‘লাইসেন্স, চিকিৎসক, ডিপ্লোমাধারী নার্স না থাকাসহ বিভিন্ন অনিয়মের কারণে কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতাল এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে অপরাধ অনুযায়ী জরিমানা করা হয়।’

এর মধ্যে জেনারেল হাসপাতাল ৮০০০ টাকা, নুরজাহান প্রাইভেট হাসপাতাল ৫০০০ টাকা, লেক ভিউ প্রাইভেট হাসপাতাল ৫০০০ টাকা, মেরি স্টোপস ৩০০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

এছাড়া আরও পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অব্যবস্থাপনার জন্য পরিদর্শন টিম অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তাদেরকে প্রাথমিক ভাবে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কোন অনিয়ম পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসময় আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সকল ত্রুটি নিরসনের জন্য বলা হয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

দুই দিনের এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন- মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান, সিভিল সার্জন ডাঃ শাহজাহান কবীর চৌধুরী, বিএমএ সভাপতি ডা. শাব্বির হোসেন খান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তানজিলা সিদ্দিকা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মৌসুমী আক্তার, মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সালেহ এলাহী কুটি, পৌর কাউন্সিলর মনবীর রায় মঞ্জুসহ জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পৌরসভার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দ।


মৌলভীবাজার পৌরসভার মেয়র ফজলুর রহমান বলেন, ‘শহরের বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোর ভয়াবহ অবস্থা। অপারেশন থিয়েটারের অপরিচ্ছন্নতার কারণে নতুন রোগ জীবানু ছড়াতে পারে, এরকম অবস্থা দেখেছি। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা অনুযায়ী নেই চিকিৎসক, নার্স এবং যন্ত্রপাতি। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগকে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি। এছাড়া আমরা পরিদর্শনকালে বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে সতর্ক করে দিয়ে আসছি। আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সংশোধন না হলে স্থানীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসন, পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পুলিশ বিভাগ বসে আরো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই সময়ের মধ্যে ত্রুটি সংশোধন করতে পারবে না, গুরুতর অভিযুক্ত এমন প্রতিষ্ঠান বন্ধের সিদ্ধান্ত আসতে পারে।’