মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার পরীক্ষাকেন্দ্রে এক হল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে আলিম পরীক্ষার্থী ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার পর রাতের আঁধারে কেন্দ্র সচিবের পা ধরে মাফ চেয়েছেন অভিযুক্ত হল পরিদর্শক। তবে তাকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে মৌখিকভাবে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
সোমবার থেকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
একাধিক সূত্র জানায়, শনিবার (২৭ এপ্রিল) আলিম পরীক্ষার বালাগাত মানতিক বিষয়ের পরীক্ষা ছিল। ওইদিন পরীক্ষা কেন্দ্রের ৭নং কক্ষে হল পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন রবির বাজার সিনিয়র মাদরাসার শিক্ষক মোখলেছুর রহমান। তিনি ওই কক্ষে পরীক্ষা চলাকালে এক ছাত্রীর কাছে বার বার যান এবং উত্তর বলে দেয়ার ছলে শরীরে হাত দিয়ে শ্লীলতাহানি করেন।
ওই দিনই শিক্ষার্থী বাড়িতে ফিরে অভিভাবকদের বিষয়টি জানান। রোববার মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সুপারের ভাই একই মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল মুন্তাজিমকে বিষয়টি জানানো হয়। ভাইয়ের মাধ্যমে মাদরাসার সুপার ও কেন্দ্র সচিব বিষয়টি জানতে পারেন। পরে কেন্দ্র সচিব বিষয়টি রবির বাজার মাদরাসার সুপারকে জানান।
দুই মাদরাসার সুপারের পরামর্শে রোববার রাতে অভিযুক্ত হল পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান কেন্দ্র সচিবের পা ধরে মাফ চান। সোমবার থেকে ওই শিক্ষককে হল পরিদর্শনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার শিক্ষক আব্দুল মুন্তাজিম বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ দেয়নি। তবে ঘটনাটি শুনে আমরা ওই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়েছি।
কেউ অভিযোগ না দিলে কীভাবে জানলেন, কেন ওই শিক্ষককে অব্যাহতি দেয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষক আব্দুল মুন্তাজিম বলেন, এমনি এমনি- লোকমুখে শুনেছি। তাই আমরা ওই শিক্ষককে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী ও তার পরিবার মান-সম্মানের ভয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে চায় না। তবে এ ঘটনায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ রয়েছে শিক্ষার্থীর পরিবার। শুধু পরীক্ষার্থীর পরিবার নয়, বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পরীক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত হল পরিদর্শক মোখলেছুর রহমান বলেন, আমি পরীক্ষার হলে একটু কড়াকড়ি দিয়েছি পরীক্ষার্থীদের। তাই এমন অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মনসুর মোহাম্মদিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসার সুপার ও কেন্দ্র সচিব মো. আব্দুল মন্তাকিম বিষয়টি প্রথমে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তবে বিষয়টি শুনে ওই শিক্ষককে হল পরিদর্শনের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।