মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গরু চোর চক্র সক্রিয়। গত তিন মাসে উপজেলায় প্রায় অর্ধ শতাধিক গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় চুর চক্র গরু চুরি করে প্রাইভেট কারে নিয়ে পালিয়ে যাবার সময় স্থানীয় লোকজন তিন গরু চোরকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। চুরির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কারটি জব্দ করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাধবপুর চা বাগানের বাংলো টিলা থেকে দু’টি ও নুরজাহান চা বাগান থেকে দু’টি গরু চুরি হয়। ঐদিন সন্ধ্যায় নুরজাহান চা বাগান ও ডলুবাড়ি এলাকার লোকজন সন্দেহজনকভাবে একটি প্রাইভেট কার আটক করে। এ সময় চালক পালিয়ে গেলেও কারের ভিতর থেকে চোরাই দুটি গরু ও তিন চোরকে আটক করে এলাকাবাসী শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।
আটককৃত গরু চোররা হলেন- শ্রীমঙ্গল উপজেলার মোতাব্বির হোসেন (২৫), আব্দুল আহাদ (৩০), জাকির হোসেন (২৮)।
সদর ইউনিয়নের সদস্য কবিতা কর্মকার জানান, জানুয়ারি মাসে প্রায় ৮০ হাজার টাকা মূল্যের তার একটি গরু চুরি হয়েছে। জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ফুলবাড়ি চা বাগান থেকে লাল মিয়ার আড়াই লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ৪টি গরু চুরি হয়। আতর আলীর ১টি, জয়নাল মিয়ার ৫টি, সামছু মিয়ার ১টি, চন্দন বাউরীর ৪টি ও মিলন সাঁওতালের ১টি গরু চুরি হয়।
মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু জানান, তার ইউনিয়নে রনজিৎ নুনিয়ার ১টি, সুনীল শুক্ল বৈদ্যের ২টি, ইন্দ্রজীৎ নুনিয়ার ১টি, আব্দুল খালিকের ১টি, হারুন মিয়ার ১টি, বিমল সাঁওতালের ২টি, মনু মিয়ার ৪টি ও জানকা নুনিযার ১টি গরু চুরি হয়েছে। এভাবে ৩ মাসে শুধুমাত্র মাধবপুর, ফুলবাড়ি ও নুরজাহান চা বাগান এলাকা থেকে প্রায় ৫০টি গরু চুরি হয়েছে।
কমলগঞ্জ থানার এএসআই আব্দুল হামিদ জানান, চা বাগান ও জাতীয় উদ্যানের একাংশে পাহাড়ি এলাকায় ঘুরে গরু ঘাস খায়। এ গরুগুলি ঘাস খেয়ে কিছুটা বিলম্বে চা বাগানে ফিরে। এ সুযোগে সন্ধ্যার পর স্থানীয় চোরচক্রের সাথে পেশাধারী বহিরাগতরা যুক্ত হয়ে সড়কধার থেকে ছোট আকারের গরু ধরে কারের পিছনের আসনে তুলে নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় থানার শেষ সীমানায় শ্রীমঙ্গল থানার ডলু বাড়ি এলাকায় কারসহ গরু চোর আটকের খবর পেয়ে কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ গিয়ে তিন গরু চোরকে আটক করে। গরু উদ্ধার করে তিন চোরসহ প্রাইভেট কারটি প্রথমে শ্রীমঙ্গল থানায় নিয়ে গেলেও পরে কমলগঞ্জ থানায় নিয়ে আসা হয়।
কমলগঞ্জ থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) সুধীন চন্দ্র দাস বলেন, তিন গরু চোর আটক, দুটি গরু উদ্ধার ও চুরির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় আটক তিন গরু চোরকে গ্রেফতার দেখানো হয় ও প্রাইভেট কারটি জব্দ দেখানো হয়েছে।