পূর্ব লন্ডনে বসবাসকারী বাংলাদেশি গৃহবধূ নাজিয়াকে হত্যার দায় আদালতে স্বীকার করে অনুতপ্ত হয়েছেন ঘাতক স্বামী আনহার আলী। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ওল্ড বেইলি আদালতে এ মামলার শুনানি হয়। গত বছরের ২২ অক্টোবর এ হত্যাকাণ্ড সংঘঠিত হয়।
স্ত্রী হত্যার দায় স্বীকার করে দেওয়া জবানবন্দিতে আনহার আলী বুধবার (৩ এপ্রিল) আদালতকে জানান, দড়ি দিয়ে বেঁধে ছুরিকাঘাত করে নির্যাতন চালিয়ে স্ত্রী নাজিয়া বেগমের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। হত্যার পর লাশ চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে দুই সন্তানের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। কয়েক ঘণ্টা পর ঘুম থেকে জেগে পুলিশকে ফোন করে জানান, তিনি স্ত্রীকে খুন করেছেন।
আদালত সূত্রে ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, পূর্ব লন্ডনের জাহানারা বেগমের মেয়ে নাজিয়া বেগম বো এলাকার এলসমোর রোডের একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। ঘটনার দিন পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে না থাকার সুযোগ নেন আনহার। সে সময় দুই শিশুসন্তান ঘরের ওপরের তলার বেডরুমে ঘুমোচ্ছিল।
দুই মেয়ে সন্তানের মা নাজিয়া আলী বেগমকে (২৫) হত্যায় একমাত্র আসামি হিসেবে তার স্বামী মোহাম্মদ আনহার আলীর (৩২) বিরুদ্ধে লন্ডনের ওল্ড বেইলি কোর্টে অভিযোগ গঠন করা হয়। এই দম্পতির তিন ও পাঁচ বছরের দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ লাশ উদ্ধারের সময় জানায়, নৃশংস হামলা চালিয়ে নাজিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
নাজিয়া বেগমের মা জাহানারা বেগম শুক্রবার বলেন, ‘নাজিয়ার মৃত্যুর দিনটি আমাদের জীবনের সবচেয়ে দুঃখের দিন। তার দুই শিশুকন্যা প্রায়ই মায়ের কথা বলে আর কাঁদে।’
নাজিয়া দু’বছর আনহারের সঙ্গে সংসার করার পর ২০১৭ সালে ডিভোর্সের আবেদন করেন। পরে এ দম্পতি আলাদা থাকা শুরু করেন। গত বছরের এপ্রিলে নতুন একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন নাজিয়া। আর এ সম্পর্কের কথা জানতে পেরেই আনহার নাজিয়ার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তিনি নাজিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। আদালতে উপস্থাপিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বেথনাল গ্রিনের একটি দোকান থেকে স্ত্রীকে হত্যার উদ্দেশ্যে দুটো ছুরি ও দড়ি কেনেন আনহার।
এ মামলায় আগামী ১৭ এপ্রিল লন্ডনের ওল্ড বেইলি কোর্টে আনহার আলীর সাজা ঘোষণা করা হবে। আনহার ও নাজিয়া দুজনেই সিলেটের বাসিন্দা।