রিপন দে: পর্যটন জেলা মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক এবং হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের উন্নয়নের জন্য প্রায় ৩৪ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে সিলেট বন বিভাগ। প্রকল্প প্রস্তাবটি পেয়ে বাস্তবতা যাচাই-বাছাই করতে বন পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের একটি দল সরেজমিনে তিনটি স্পট পরিদর্শনও করেছেন।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজার শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দক্ষিণে বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক। বন্যপ্রাণি ও উদ্ভিদবৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ২০০৬ সালে সংরক্ষিত এই বনভূমিকে ইকোপার্ক ঘোষণা করা হয়। ৮৮৭ একর জায়গা নিয়ে গড়ে তোলা এই পার্কে ২০০৬-২০০৭ অর্থবছরে সোয়া কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি দু’কক্ষবিশিষ্ট ইকো কটেজ, চারটি পিকনিক স্পট, দুটি পর্যবেক্ষণ (নিরাপত্তা) টাওয়ার, চারটি নিরাপত্তা পোস্ট, পাঁচটি গণশৌচাগার, একটি টিকিট কাউন্টার ও একটি তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে।
কিন্তু জনবল সঙ্কট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে না পারায় এটি চালু করা যায়নি। দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় অবকাঠামো নষ্ট হয়ে বর্তমানে পরিত্যক্ত। মৌলভীবাজার শহরের আশপাশে মনোরম তেমন কোনো স্থান না থাকায় নিরিবিলি স্থান হিসেবে এবং শহরের পাশে হওয়ায় বর্ষিজোড়া ইকোপার্ক স্থানীয় এবং পর্যটকদের জন্য সম্ভাবনাময় স্পট হতে পারে। এটিকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থানে পরিণত করার লক্ষ্যে নতুন অবকাঠামো নির্মাণের পাশাপাশি বিদ্যমান পুরাতন অবকাঠামোসমূহ মেরামত ও উন্নয়ন কাজের জন্য একটি প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে বন বিভাগ।
অন্যদিকে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে ১ হাজার ২৫০ হেক্টর আয়তনের নতুন ২টি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ, উদ্যানের পাশের বাগমারা লেকের অবকাঠামো উন্নয়ন, উদ্যানের ভেতর দিয়ে বয়ে চলা রেললাইনের ওপরে পর্যটকদের চলাচলের সুবিধার্থে ঝুলন্ত সেতু (কেনোপি) নির্মাণসহ পুরাতন অবকাঠামোর সংস্কার কাজ, পথচারীদের স্বাচ্ছন্দে চলাফেরার জন্য হাঁটার পথ তৈরিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় উন্নয়ন কাজ করানো হবে।
এছাড়া হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান পর্যটকদের কাছে অন্যতম পছন্দের। ৬০০ হেক্টর আয়তন নিয়ে গঠিত হবিগঞ্জের সাতছড়ি উদ্যানের ভেতরে পর্যটকদের পায়ে হাঁটা পথ নির্মাণ, মিঠাপানির জন্য নতুন কয়েকটি পুকুর খনন, উদ্যানের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত ছড়াগুলোর ভাঙন রোধ কাজ, ওয়াশরুম নির্মাণ, লেকসহ সকল পুরাতন ও নতুন অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
এ বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (বন্যপ্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ) আবু মোছা শামসুল মোহিত চৌধুরী জানান, কাজের যে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে আশা করছি কিছুটা যোগবিয়োগ হয়ে দ্রুত সেটি পাস হবে।