যুক্তরাজ্যে বসবাসের অনুমতি পাওয়ার জন্য বিদেশিদের যে পরীক্ষা দিতে হয় তাতে নকল সরবরাহের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক ব্রিটিশ কোচিং ব্যবসায়ী। আবেদনকারীদের পরীক্ষায় পাসের ব্যবস্থা করে দিতে অভিযুক্ত ব্যক্তি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উত্তর সরবরাহের ব্যবস্থা করত। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানিয়েছে, এরকম বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যারা অভিবাসী হতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের জালিয়াতির মাধ্যমে পরীক্ষা পাসের ব্যবস্থা করে দেয়।
পরীক্ষাটির নাম ‘লাইফ ইন দ্য ইউকে।’ যুক্তরাজ্যে থাকতে হলে যেসব আইন-কানুন, রীতি-প্রথা মেনে চলতে হয়, সেসবের বিষয়ে আবেদনকারীর ধারণা পরখ করতে নেওয়া হয় এই পরীক্ষা। অভিবাসনের অনুমতি পেতে এই পরীক্ষায় পাস করা বাধ্যতামূলক। বহুনির্বাচনি প্রশ্নপত্রে উত্তর দিতে হয় প্রার্থীদের। গত বছর প্রায় দেড় লাখ লোক ‘লাইফ ইন দ্য ইউকে’ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। প্রতি পাঁচ জনে ফেল করেছে একজন। ২৪টি প্রশ্নের মধ্যে পাস করতে হলে অন্তত ১৮টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে হয়। সময় ৪৫ মিনিট।
এই পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিবিসি অনুসন্ধান শুরু করে। তারা জানতে পারে, লন্ডনের আশেপাশে অবস্থিত কিছু কোচিং সেন্টার প্রার্থীদের দুই হাজার পাউন্ডের বিনিময়ে নকল সরবরাহ করে। এসব প্রতিষ্ঠান পরীক্ষার প্রস্তুতিতে সহায়তা করার নামে তাদের কার্যক্রম চালায়। পরীক্ষার্থীর কানে ব্লুটুথ ইয়ারফোন লাগানো থাকে, সেই সঙ্গে থাকে একটি গোপন মোবাইল ফোনসেট। পরীক্ষার প্রশ্ন জানার পর বাইরে থেকে ফোনে উত্তর বলে দেওয়া হয়।
বিবিসির ধারণকৃত ভিডিওতে পূর্ব লন্ডনে অবস্থিত ‘আইডিয়াল লার্নিং অ্যাকাডেমির’ পরিচালক আব্দুল রাজাকে বলতে দেখা গেছে, ‘সবকিছুর ব্যবস্থা করা হবে। তারা সব উত্তর বলে দেবে।’ আব্দুল রাজা একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ব্যবসায়ী। তার মতো আরও অনেকে এমন কাজে জড়িত।
এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় যেসব কেন্দ্রে, সেসব কেন্দ্রে নজরদারি ব্যবস্থা কঠোর হওয়ার কথা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, কেন্দ্রগুলো আউটসোর্সড। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র মন্তব্য করেছেন, পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো যাদের তত্ত্বাবধানে আছে, তাদের উচিত ছিল আরও ভালো নজরদারির ব্যবস্থা রাখা। তারা পরীক্ষার্থীদের তল্লাশি নেওয়ার ব্যবস্থাও করতে পারত। যেসব পরীক্ষাকেন্দ্র যথাযথভাবে পরিচালনা করা হয়নি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।